একটানা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে যদি মনে করেন যে, এটি আপনাকে কাজে আরও মনোনিবেশ করতে ও সংকল্পবদ্ধ হতে সাহায্য করছে, তা হলে আপনি ভুল ভাবছেন। অনেকে সপ্তাহে ৫০ ঘণ্টা বা তার বেশিও কাজ করে থাকেন। কিন্তু এটি মূলত আপনার কাজের আরও ক্ষতি করে এবং স্বাস্থ্যের জন্যও এটি অনেক ক্ষতিকারক।
দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার ফলে আপনার কাজের উৎপাদনশীলতা ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে। আর এটি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে সেটি হতে পারে মানসিক চাপের কারণ। জানুন দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার ক্ষতিকারক যত দিক—
১. কাজের উৎপাদনশীলতা কমে যায়
দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার পরিণতি মোটেও ভালো ফল দেয় না। একটা সময় পর গিয়ে এটি আপনার কাজের উৎপাদনশীলতা কমিয়ে ফেলতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলে সেটি প্রথম কয়েক সপ্তাহ অনেক কাজ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করলেও পরে গিয়ে কাজের উৎপাদনশীলতা কমিয়ে ফেলে। কিন্তু প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সীমা রেখে কাজ করলে সেটি আপনার কাজের উৎপাদনশীলতা বজায় রাখতে পারে দীর্ঘ সময়।
২. স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে
অতিরিক্ত কাজ করার ফলে আপনার স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হতে পারে। দীর্ঘ সময় কাজ করার ফলে আপনার শরীরে বেশি ক্লান্তিভাব আসতে পারে। এ ছাড়া ঘুম বেশি পাওয়া, মাথাব্যথা, চাপ বৃদ্ধি পাওয়া, বিরক্তিবোধ কাজ করার মতো সমস্যাগুলো হতে পারে অতিরিক্ত কাজ করার ফলে। আর এগুলো আপনার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটানোর কারণ হতে পারে।
৩. সামাজিক জীবনে প্রভাব
বেশি পরিমাণে কাজ করার মাধ্যমে আপনার সামাজিক জীবন থেকে অনেকটা অবহেলিত হতে পারেন। এটি সম্পর্কে দ্বন্দ্ব সৃষ্টির কারণ হতে পারে। এতে আপনি পরিবারকে সময় দিতে অনেক সময় অক্ষম হয়ে থাকেন। সব দিকে মানিয়ে চলে নির্দিষ্ট পরিমাণ সময় ব্যয় করা উচিত। এতে আপনার কাজের সঙ্গে সামাজিক জীবনও ভালো যাবে।
৪. দুর্ঘটনা বৃদ্ধির সম্ভাবনা
অতিরিক্ত কাজের চাপে এবং ক্লান্ত হয়ে পড়ে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। বেশি পরিমাণে কাজ করার ফলে আপনার মানসিক সক্ষমতা কমে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনা ও জখমের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। তাই নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে এ রকম ঝুঁকি না নেওয়াই ভালো।
৫. হার্টঅ্যাটাক ও মস্তিষ্কের ক্ষতি
প্রতিবেদনে দেখা যায়, যারা সপ্তাহে ৪৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন, তাদের হার্টঅ্যাটাকের সম্ভাবনা প্রায় ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া অতিরিক্ত কাজ করার ফলে সেটি মস্তিষ্কে চাপ প্রদান করে মস্তিস্কের ক্ষতি করে এবং পাশাপাশি হার্টকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।
৬. মেদ বেড়ে যাওয়া
নিয়মিত দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার ফলে আপনার অন্যান্য কার্যকারিতা যেমন হাঁটাচলা, অনুশীলন, রান্না করা এবং ঠিকমতো ঘুম হওয়ার মতো বিষয়গুলো বাধাগ্রস্ত হয়। এটি আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করার পাশাপাশি আপনার মেদ বৃদ্ধিরও কারণ হতে পারে। আপনি কাজের সময় কয়েক ঘণ্টা চেয়ারে বসে থাকলে আপনার অন্যান্য কাজ বাধাগ্রস্ত হয়ে এটি আপনার মেদ বৃদ্ধি করতে পারে।