পাঁচ বছর পূর্ণ করে ৬ষ্ঠ বছরে পদার্পণ করলো আমাদের প্রিয় পত্রিকা মেহেরপুর প্রতিদিন। শোষক সমাজের রক্তচক্ষু, পদে পদে বাঁধা ডিঙিয়ে প্রতিটি দিন পার করে চলেছি আমরা। তবে যতটা রক্তচক্ষুর ভয়, তার চেয়ে বেশি পেয়েছি পাঠকদের প্রাণভরা ভালোবাসা। পাঠকদের ভালোবাসায় মেহেরপুর প্রতিদিন এখন উচ্চারিত শব্দ। আমরা পাঠকদের কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ। গেল পাঁচ বছরে মেহেরপুর প্রতিদিন মানুষের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছে। আমাদের প্রতিদিনের সংখ্যা, একেকটি জবাবদিহীতার অংশ হিসেবে কাজ করে। আমাদের জবাবদিহীতা সমাজের কাছে, সাধারণ জনগণের কাছে, পাঠকদের কাছে। প্রতিদিন ভোর হয় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষ্য নিয়ে। মেহেরপুর প্রতিদিন পরিবার নতুন দিগন্ত উন্মোচনে বদ্ধ পরিকর।
সীমান্তবর্তী ছোট্ট জেলা মেহেরপুর থেকে একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ অব্যাহত রাখা অনেক দুরহ একটি কাজ। যেখানে ছাপাখানা নেই, পত্রিকা মেকাপ করার জন্য মেকাপম্যান পাওয়া যায় না। প্রিন্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় ট্রেসিং পেপার ও কালিও পাওয়া যায় না। পত্রিকার রসদ যোগানো বিজ্ঞাপনদাতা বা শিল্পপ্রতিষ্ঠানও নেই। কালেভদ্রে শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপন পেতেও যে পরিমাণ বেগ পেতে হয়, তা আর নাই বললাম। সঙ্গে রয়েছে কাগজ, কালীসহ বিভিন্ন উপকরণের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি। অসংখ্য অসঙ্গতির মধ্যে দিয়ে একটি দৈনিকের পাঁচ বছর অতিক্রম করার ব্যাপারটি ছোট করে ভাবারও কিছু নেই। আমরা সেই ভাবনার কাজটি করে চলেছি।
সংগত কারণেই এ নিয়ে আমরা আনন্দিত, গর্বিত। আমরা পেরেছি। একটা জায়গায় মেহেরপুর প্রতিদিনকে দাড় করাতে পেরেছি। এই যাত্রায় আমাদের সঙ্গে রয়েছেন অগণিত পাঠক আর শুভানুধ্যায়ী। মেহেরপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষেরভালোবাসা আমাদের প্রধান শক্তি। পাঠকসাধারণের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখে পত্রিকাটি আমরা করোনার অতিমারিতেও প্রকাশ করে গেছি। আমরা বিশ্বাস করি, পাঠকই আমাদের সবচাইতে বড় শক্তি, বড় শ্রদ্ধার জায়গা। তাদের হাতে প্রতিদিন একটি গ্রহণযোগ্য পত্রিকা তুলে দেওয়ার চেষ্টা পাঁচ বছর ধরে আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে করে গেছি। আগামী দিনেও এই নিষ্ঠা দৃঢ়ভাবে বজায় রাখব। মাঝে মধ্যে যে আমাদের ভুল হয়না এমনিটও নয়। ভুলত্রুটিগুলোর দায় নিয়ে সামনের দিনগুলোতে আরো ভালো করার চেষ্টা করবো।
‘জনগণের মুখপত্র’ এই স্লোগানের স্বাক্ষর রেখে যা কিছু জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে সেধরণের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আমাদের সহকর্মীরা নিরলস কাজ করছে। সংবাদের ভিতরকার সকল সত্য প্রকাশ কার চেষ্টা করেছি। অসততা আমাদের স্পর্শ করতে পারেনি। তবে আমরা নিরপেক্ষ নই। আমরা মানুষের পক্ষে। প্রতিটি সাধারণ মানুষ, প্রতিটি সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পক্ষে আমাদের কলম চলবে। দেশের মানুষই আমাদের মূলশক্তি।
২০১৮ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের দিন যাত্রা শুরু করেছিল মেহেরপুর প্রতিদিন। স্বাধীনতার এই মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসের যুদ্ধে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত ও দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতার দীপ্ত চেতনায় আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। অদম্য সাহস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার অংশিদার আমরাও।
মেহেরপুর প্রতিদিনের প্রকাশক এম এ এস ইমন একজন তরুন রাজনীতিবীদ এবং স্বপ্নচারী মানুষ। মেহেরপুর প্রতিদিনের মত আরো কয়েকটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। একজন গণমাধ্যমবান্ধব হিসেবে তিনি সমাজে সুপ্রতিষ্টিত এক চরিত্র। তাঁর সুদক্ষ দিকনির্দেশনায় আমরা মেহেরপুর প্রতিদিনকে নিয়ে গেছি এক অনন্য উচ্চতায়। যা এখন মেহেরপুরের প্রতিটি মানুষের উচ্চারিত একটি নাম। একটি শব্দ মেহেরপুর প্রতিদিন।
মেহেরপুর প্রতিদিন যা পারে, যা পেরেছে অন্য কেউ পারেনি, পারেনা। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এই আমাদের প্রতিজ্ঞা মেহেরপুর প্রতিদিন মানুষের মুখে মুখেই উচ্চারিত হতে থাকবে সবসময়। অর্ধযুগে পদার্পণের এই শুভক্ষণে সকল পাঠক, শুভান্যুধায়ী, বিজ্ঞাপনদাতা, কলাকুশলীর প্রতি শুভেচ্ছা।