বিসিবি সভাপতি ও সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনের খোঁজ এখনো মেলেনি। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের পরে আওয়ামী লীগের অনেকের মতো পাপনও গা ঢাকা দিয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে বিসিবির স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এদিকে বিসিবিতে রদবদলের জন্য অনেকে নেমেছেন আন্দোলনে। কিন্তু সীমাবদ্ধতা থাকায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও কিছু করতে পারছেন না। নিয়ম না মেনে কাজ করলেই আইসিসি থেকে আসতে পারে নিষেধাজ্ঞার খড়গ। তাই উভয় সংকটে পড়েছে বিসিবি, ভূগছে সিদ্ধান্তহীনতায়।
গতকাল গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়ে বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন পাপনের বিষয়ে বলেছেন, ‘কোনো যোগাযোগ হয়নি উনার সঙ্গে এখনো। জানিও না উনি কোথায় আছেন। সুতরাং বলতে পারব না। যদি যোগাযোগ হয় তাহলে কথা বলতে পারব। কিন্তু এখন যেহেতু পাপন ভাই নেই, যদিও উনি সভাপতি হিসেবে আছেন, এখনো পদত্যাগ যেহেতু করেননি। আসিফ মাহমুদ এসেছেন উপদেষ্টা হিসেবে, উনিই এখন সিদ্ধান্ত নিবেন, সবকিছু নির্ভর করছে উনার ওপরে। উনি যোগ্য ব্যক্তিকে তুলে নিবেন, সেটা উনিই চিন্তা করবেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট, ফুটবল বা অন্য অঙ্গনে কারা নেতৃত্ব দেবেন বা কারা সঠিক পথে নিয়ে যাবেন, সেটি উনি চিন্তা করবেন। এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। আমরা একটি নির্বাচিত বোর্ড, সেই বোর্ডে কী হবে, সেটি সময় বলে দিবে।’
বিসিবিতে রদবদলের বিষয়ে সুজন বলেছেন, ‘উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে, কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। একটা প্রাথমিক আলাপ হয়েছে। তবে আমাদের সংবিধান, গঠনতন্ত্র ও আইনের নিয়মকানুন দেখতে হবে, দেখে তাকে একটু জানাতে হবে। তার পরে হয়তো বোর্ড থেকে একটা সিদ্ধান্ত আসবে।’ আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘যারা আন্দোলন করছেন, কেন করছেন আমি জানি না। তবে হ্যাঁ, একটা পট পরিবর্তন হলে অনেক কিছু হয়। সেটার ধারাবাহিকতায় হয়তো এগুলো হচ্ছে। বিসিবি তো কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। আমি থাকি বা না থাকি সেটা সময় বলে দিবে। আর যারা আসবে তাদেরও স্বাগত জানাই। আমি সারা জীবনের জন্য বিসিবিতে থাকব, এমন নাতো। এটা আমার চাকরি নাতো। বিসিবির দুটি নির্বাচন করেই আমি পরিচালক হয়েছি। এখন যেই আসুক বোর্ড ভালোভাবে চলুক, উন্নয়ন হোক, সেটি আমরা সবাই চাই।’
ভবিষ্যৎ নিয়ে সুজন বলেছেন, ‘আমরা অনেকে অনেক কথা বলছি। যা এই মুহূর্তে ঠিক না বলে আমি মনে করি। দেশকে আমরা আগে গড়ার চিন্তা করি। এখন দেশ গড়ার সময়। দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতিগুলো ঠিক করার চেষ্টা করি। সবাই সবার জায়গা থেকে চেষ্টা করি। আমার জায়গা রাজনীতি না, ফুটবল না, আমার জায়গা ক্রিকেট। তো সেসব জায়গা থেকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আমরা অনেক কিছু নিয়ে পড়ে আছি। অনেকে অনেক কিছুর স্বপ্ন দেখছে, দেখতেই পারেন। বোর্ড সভাপতি হবেন, বোর্ড ডিরেক্টর হবেন, সেটা হতেই পারেন। সময় আসলে সবাই সবকিছু হবেন। কিন্তু এখন সেই সময় না। একটা নতুন সরকার আসছে, যেন ভালো কিছু হয় আমরা সেই পথেই যেতে চাই। সবাই সবার পিছে না লেগে প্রকৃত দেশপ্রেমিক হলে দেশ গড়ার কাজে লাগতে হবে।’
সূত্র: ইত্তেফাক