ইন্টারনেটের দুনিয়ায় বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। প্রযুক্তিময় সেই জীবনকে আরও সহজ করে দিয়েছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এই প্রযুক্তি নিয়ে বিশ্বে এখন রীতিমতো মাতামাতি চলছে। প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত অ্যাপ্লিকেশন, সফ্টওয়্যার বা প্লাগইন্স, সার্চইঞ্জিন বা অ্যালগরিদম সবখানেই নিজের জায়গা দখল করে নিয়েছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স।
শিল্প, বাণিজ্য এবং গ্রাহকসেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে অটোমেশন করে বিভিন্ন কাজকে সয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করছে। ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বা মার্কেটিংএ, এ আই ব্যবহারকারীদের ও গ্রাহকদের আচরণ পর্যবেক্ষণ করে তার কাছে প্রচারণা চালাচ্ছে।
বর্তমান বিশ্বে ২৫০ মিলিয়ন বা ২৫ কোটির বেশি মানুষ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করছে। উদ্ভাবনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক চালিকাশক্তিতেও এআই ভূমিকা রাখছে। পিডব্লিউসি ডট কমে প্রকাশতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স স্টাডির পাবলিকেশন, গ্লোবাল আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স: এক্সপ্লইটিং দ্য এআই রেভ্যুলিউশন এর তথ্যানুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে এ আই বিশ্বের জিডিপিতে ১৫ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার যোগ করবে।
গেটসনোট ডট কমে লেখা প্রযুক্তিবিদ বিলগেটসের মতে, এআই শুধু প্রযুক্তিগত খাতেই নয়, যে কোনো নতুন উদ্ভাবনে গতি আনবে। বিজ্ঞান, মহাকাশ গবেষণা, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, জলবায়ু, মানবজীবন ও বিশ্বের সাথে সম্পৃক্ত কোন কিছুই এআইয়ের বাইরে থাকবে না।
গোলাপের কাঁটার মতোই, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তারও রয়েছ বিড়ম্বনার জায়গা। প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন চাকরিখাত থেকে বাদ যেতে পারে অসংখ্য মানুষ। তবে এআইয়ের সঠিক ব্যবহার আবার সে জায়গাকে উন্নীত করতে পারে। অথরিটি হ্যাকার পোর্টালের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৫ সালের মধ্যে এআই-এর কারণে চাকরি হারাতে পারে ৮৫ মিলিয়ন বা সাড়ে ৮ কোটি মানুষ। তবে আবার নতুনভাবে প্রায় ১০ কোটি মানুষের জন্য নতুন চাকরিখাত তৈরি করবে।
সেই সাথে, এআই ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণহীনতাও বাড়বে অনেক। যেমন, কিছুদিন আগেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এ আই দিয়ে তৈরি ভিডিওচিত্র, যেখানে তিনি শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিরূপ মন্তব্য করেছেন, যা অনেক নেটিজেনকেই বিভ্রান্ত করেছে। তাই এ আই এর এই বিড়ম্বনা থেকে বাঁচতে সাধারণ জনগণকেও ফ্যাক্টচেকিং এর মতো বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করতে হবে।
গোপনীয়তার ঝুঁকি বাড়বে অনেক। হাজার হাজার সফ্ট্ওয়্যার ও এপ্লিকেশনে এ আই অটোমেশন করে নানান সুবিধা গ্রাহকদের দিয়ে আসছে। আর গ্রাহকরাও সে সুযোগ কাজে লাগাতে নিজেদের প্রাইভেসি রক্ষার কথা না ভেবেই এ আই এর যাচ্ছে তাই ব্যবহার করছেন। ফলে সুরক্ষা ঝুঁকি বাড়ছে বহুগুনে। তাই এর বিকাশে নৈতিকতা এবং নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন প্রযুক্তিবিদরা।
সূত্র: কারবেলা