মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপিকে আগামী সংসদ নির্বাচন েেদলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার দাবীতে একাট্টা ঘোষণা করেছেন নেতারা।
মঙ্গলবার বিকালে মেহেরপুর পৌর কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তিকে দূর্বলকারী, দল ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিরোধী চক্রের প্রধান পৃষ্ঠপোষক , আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভীতি প্রদর্শণ ও ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের পরাজয়ের কুশিলব ,দুর্নীতি , স্বজনপ্রীতি ও পারিবারিক করণের একমাত্র দলবিরোধী সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনকে আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার দাবী জানান নেতারা।
সভাপতির বক্তব্যে মিয়াজান আলী বলেন, মেহেরপুরে আওয়ামী লীগকে এক ব্যক্তি ঘরবন্দী করে রেখেছেন। তবে সময় এসেছে আওয়ামী লীগকে আবার রাজপথে সক্রিয় করার। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেনের হাতে নেতৃত্ব চলে যাওয়ায় দলের ত্যাগী নেতা–কর্মীরা ছিটকে পড়েছেন। এর সুযোগ নিয়েছে বিএনপি–জামায়াত। আগামী সংসদ নির্বাচনে তাঁকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। ফরহাদ হোসেনকে আবার মনোনয়ন দিলে আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁর পক্ষে কাজ করবেন না।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জিয়া উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, নৌকার মাঝি পছন্দ না হলে আমি ননৌকায় ভোট দেব না, আর যদি পছন্দ হয় তাহলে স্বর্বস্ব দিয়ে নৌকার বিজয় ঘরে তুলবো।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রসুল বলেন, ‘সারা জীবন আওয়ামী লীগের জন্য জেল–জুলুম, বোমা হামলার শিকার হয়েছি। এরপরও আমি নাকি আওয়ামী লীগের কেউ না। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজের পছন্দমতো লোকদের নিয়ে দল চালান। সেখানে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতারা ঠাঁই পান না। যখন নির্বাচন আসে তখন তিনি দল গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পরে কাউকে মনে রাখেন না। প্রধানমন্ত্রীর কছে আকুল আবেদন, এমন নেতাকে যেন মনোনয়ন না দেওয়া হয়। তাঁকে বাদ দিয়ে যে কাউকে মনোনয়ন দিলে তাঁর পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা এক হয়ে কাজ করবেন।’
সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক এম এ এস ইমন বলেন, যারা মেহেরপুরে আওয়ামী লীগকে দুর্দিনে ধরে রেখেছে তারা আপনার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করেছে। স্বসম্মানে আপনার সরে যাওয়া উচিৎ। মুজিবনগরকে শেখ হাসিনা উন্নয়নের জন্য ব্ল্যাঙ্ক চেক দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আপনি নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। সারাদেশে যে উন্নয়ন তারই রুটিন উন্নয়ন হয়েছে মেহেরপুরে।পৌর কলেজের ফান্ড থেকে ২৫ লাখ টাকা নিয়েছেন সরকারি হয়নি। নিজের বাপের নামে কলেজের নামকরণ করেছেন।
আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী আমাদের মেহেরপুরকে দেখে যান , আপনার প্রাণের সংগঠনের কি অবস্থা করে রেখেছে দেখে যান।
মাহফুজুর রহমান রিটন বলেন, দুসময়ে যারা আওয়ামী লীগকে বাঁচিয়েছিলো তারাই আজ এই মঞ্চে দাড়িয়েছে। মেহেরপুর পৌরসভা, সদর উপজেলা, মুজিবনগর উপচেলায় আওয়ামী ,লীগের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। নেতাকর্মীরা এই সকল জনপ্রতিনিধিদের সাথ্কেথা বললে তার মানরচলে যায়। বিএডিসির লেবারকে কমিটিতে নিয়ে আসা হয়েছে।
মেহেরপুর পৌরসভার দুর্দশাব শেষ নেই। মেহেরপুর পৌরসভার উন্নয়নে এখনো পর্যন্ত বাধা দিয়ে যাচ্ছেন।
জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা লাভলি ইয়সমিন বলেন, আপনারা স্বামী স্ত্রী ২০১৪ সালের আগে কোথায় ছিলেন। আমরা ভোট চেয়ে আপনাকে নির্বাচিত করেছি। আপনার মহিলা লীগের নেতাকর্মীদের দুর দুর করে তাড়িয়ে দেন।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান বলেন, ফরহাদ হোসেনের ভাই মৃদুল আমাদের সংখ্যালঘু যুবলীগ সদস্যর ১ কোটি ৮০ লাখ টাবি আত্মসাৎ করে তাকে পথের ভিখারি বানিয়েছেন।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য জেমস স্বপন মল্লিক বলেন, নারী জারেণের অগৃদুত সেজেছেন । আপনি তো মেহেরপুরের ক্যাসিনো রানি। ৬৩ জেলার ছেলেদের চাকরি হয়, মেহেরপুর জেলার ছেলেদের চাকরি হয় না।
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মেহেরপুর জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলীর সভাপতিত্বে ও জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শহিদুল ইসলাম পেরেশানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুল, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর আল মামুন, , সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা, যুবলীগের সদস্য সাজেদুল ইসলাম সাজু প্রমুখ। বিশেষ মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
এদিকে ফরহাদ হোসেনের পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যলয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁর পক্ষের নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ফরহাদ হোসেন ভগ্নিপতি বাবলু বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহিন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল ইসলাম, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরহাদ হোসেনের বড় ভাই ইমতিয়াজ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।