বর্তমান দুনিয়ার সবচেয়ে বড় সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক। বিশ্বে বর্তমান এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন। বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারী সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৩০ লাখ। ফেসবুকে সাধারণ ব্যবহারকারীদের পাশাপাশি রয়েছে ব্যবসায়িক কার্যক্রম। ফেসবুকের তিনটি প্ল্যাটফরম; মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম। এ চার প্ল্যাটফরমের কমিউনিটি গাইডলাইন মোটামুটি প্রায় একইরকম। যুগান্তরের আজকের আয়োজনে ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে বিস্তারিত লিখেছেন- বিএনএস বাহার
হঠাৎ করেই ফেসবুকে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠানো যায় না। কখনো দেখা যায় পোস্ট, কমেন্ট বা শেয়ার বন্ধ হয়ে গেছে। বহু ফেসবুক ব্যবহারকারীকে এসব সমস্যায় পড়তে হয়। ফেসবুকের একেবারে সাধারণ নিয়মনীতি মেনে চললে এসব সমস্যা হয় না। ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুকের এই নির্দিষ্ট নীতিমালাকে বলা হয় ‘কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড’।
সাধারণ আমরা কোনো পণ্য বা সেবা নিলে সেখানে একটি নির্দেশিকা থাকে। তেমনি ফেসবুকের কমিউনিটি গাইডলাইন হলো এই প্লাটফর্ম ব্যবহারকারী কমিউনিটিতে যারা রয়েছেন তাদের জন্য একটি নির্দেশিকা। এখানে কী করা যাবে, কী করা যাবে না এসব বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে। ফেসবুক নিয়মিত এই নির্দেশিকা আপডেট বা হালনাগাদ করে থাকে। সর্বশেষ গত মে মাসে তাদের কমিউনিটি গাইডলাইন হালনাগাদ করা হয়েছে। এখানে মূলত দুই ধরনের নির্দেশিকা রয়েছে। একটি সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য। অন্যটি বিজ্ঞাপন দাতাদের জন্য।
সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুকের কমিউনিটি গাইডলাইন ৬টি ভাগে বিভক্ত। এক. সহিংসতা ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ। দুই. নিরাপত্তা। তিন. আপত্তিজনক কনটেন্ট। চার. সত্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা। পাঁচ. মেধাস্বত্ব (ইন্টেলেকচুয়াল প্রাপার্টি)। এবং ছয়. অনুরোধ ও সমাধান।
সহিংসতা ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ
যে কোনো ধরনের সহিংসতা এবং উসকানিমূলক পোস্ট করা যাবে না। এমনকি হিংস বিষয়কে আরও বেশি প্রচারের জন্য বা বিষয়টি নিয়ে মজা করার জন্য তৈরি কোনো গ্রাফিকস পোস্টও করা যাবে না। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো-
* সহিংসতা এবং উসকানিমূলক পোস্ট করা বা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না।
* বিপজ্জনক ব্যক্তি এবং সংস্থার নেতিবাচক কার্যকলাপ পোস্ট করা বা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না।
* সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ পোস্ট করা বা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না।
* সংঘবদ্ধ সহিংসতা বা অপরাধমূলক কার্যক্রম পোস্ট করা বা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না।
* গণহত্যা (চেষ্টাসহ) বা একাধিক হত্যা ছবি বা ভিডিও পোস্ট করা বা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না।
* মানব পাচারকে উৎসাহিত করে এমন পোস্ট করা বা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না।
* কোনো অপরাধে সহায়তা বা অপরাধ প্রচার করে পোস্ট করা বা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না।
* বিধিবব্ধ যার আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে এমন পোস্ট করা বা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না। যেমন : অ্যালকোহল ও অস্ত্র।
* জালিয়াতি এবং প্রতারণামূলক পোস্ট।
নিরাপত্তা
কোনো মানুষের জন্য কোনোভাবে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন পোস্ট করা বা অন্যের করা পোস্ট শেয়ার করা যাবে না। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো-
* শরীরের নিজের তৈরি আঘাতের চিহ্ন অথবা আত্মহত্যা করার চেষ্টার ছবি পোস্ট করা যাবে না। তবে আত্মহত্যা সম্পর্কিত যে কোনো সংবাদ (বিশ্বাসযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত) শেয়ার করা যাবে।
* শিশু যৌন নির্যাতনের কোনো ধরনের লেখা, ছবি বা ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার দেওয়া যাবে না। অন্যের পোস্ট করা কনটেন্টও শেয়ার করা যাবে না।
* প্রাপ্তবয়স্কদেরও কোনো নগ্নতাপূর্ণ লেখা, ছবি বা ভিডিও পোস্ট বা শেয়ার করা যাবে না।
* ফেসবুক ব্যবহার করে কাউকে কোনো ধরনের হুমকি এবং হয়রানি করা যাবে না।
* যে কোনো ধরনের মানব শোষণের ভিডিও কিংবা ছবি ফেসবুক গ্রহণ করে না। যেমন : মানবপাচার, ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক শ্রম বা অন্যান্য ক্রিয়াকলাপ।
* কারও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ফেসবুকে ফাঁস করা যাবে না। একান্ত মুহূর্তের ছবি অনুমতি ছাড়া শেয়ার করা যাবে না।