তথ্যপ্রযুক্তির এ সময়ে জীবনের বড় অংশজুড়ে আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে স্মার্টফোন। করোনার কারণে সবকিছু যখন অনলাইননির্ভর, হাতে থাকা ছোট এ ডিভাইসেই স্মার্টফোনের ক্যামেরা ব্যবহার করে কোভিড পরীক্ষার নতুন উপায় উদ্ভাবনের দাবি করেছেন একদল গবেষক। কোভিড পরীক্ষার নতুন উপায় উদ্ভাবনের দাবি করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, সান্টা বারবারার গবেষক দলটি। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে ইঙ্গিত মিলছে, পিসিআর টেস্টের মতোই কার্যকর এ পদ্ধতিটি। গবেষকরা এ পদ্ধতিটির নাম দিয়েছেন স্মার্টল্যাম্প।
নতুন এ পদ্ধতিতে সাধারণত ল্যাবরেটরিতে ব্যবহৃত হয় কিন্তু সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী কিছু যন্ত্রাপাতি এবং নিজের স্মার্টফোন ব্যবহার করে কোভিড নির্ণয় করা যাবে। পিসিআর টেস্টের মতোই কার্যকর এটি। ‘জেএএমএ নেটওয়ার্ক ওপেন’-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এর বিস্তারিত জানিয়েছেন তারা। একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, এই পদ্ধতিতে টেস্টের খরচ পড়ে ৭ ডলার করে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী অথবা জনবসতি থেকে দূরে একা থাকেন বলে পিসিআর টেস্ট নিতে ভোগান্তি হচ্ছে, এমন ব্যক্তিদের কাজে আসবে কোভিড পরীক্ষার নতুন পদ্ধতিটি।
এ পদ্ধতিতে কোভিড পরীক্ষা বেশ সহজ বলে জানিয়েছে। প্রথমে গবেষকদের নির্মিত স্মার্টফোন অ্যাপ ‘ব্যাকটিকাউন্ট’ ডাউনলোড করতে হবে। এরপর নিজের ফোনটি রাখতে হবে একটি ‘হট প্লেট’-এর ওপর, ল্যাবরেটরি বা গবেষণাগারে বহুল ব্যবহার আছে এর। ফোনের পেছনের ক্যামেরা থাকবে নিচের দিকে। এরপর ‘হট প্লেট’-এর ওপর রাখা টেস্ট কিটে মুখের লালা দিতে হবে। এরপর তাতে একটি ‘রিঅ্যাকটিভ সলিউশন’ প্রয়োগ করলেই ফোনের ক্যামেরায় ভাইরাল আরএনএ দৃশ্যমান হয়ে উঠবে, চালু করে দিতে হবে অ্যাপটি।
ভাইরাসের সঙ্গে মিশে যাবে ওই ‘রিঅ্যাকটিভ সলিউশন’, রং পাল্টে উজ্জ্বল লাল ধারণ করবে। আর এই রঙের পরিবর্তন কত দ্রুত ঘটছে তার ভিত্তিতে অ্যাপটি ভাইরাসের উপস্থিতি পরিমাপ করবে। বেশ সস্তা এ টেস্ট কিট, এর ব্যবহারও সহজ। এটি কম ও মধ্যম আয়ের দেশে কম খরচে এবং জটিল ও ব্যয়বহুল প্রযুক্তি সক্ষমতার অনুপস্থিতিতে কোভিড নির্ণয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসাবে দেখছেন গবেষকরা।
তবে, প্রাথমিক গবেষণায় ইতিবাচক ফলাফল মিললেও বহুল ব্যবহারের জন্য এখনো প্রস্তুত নয় এ প্রযুক্তি। প্রাথমিক গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন কেবল ৫০ জন্য ব্যক্তি, আর স্মার্টফোনটি অ্যাপটি আপাতত কেবল স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৯ স্মার্টফোনের ক্যামেরার সঙ্গেই সমন্বয় করা হয়েছে। গ্রহণযোগ্যতা পেতে আরও জটিল বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিতে যেতে হবে এই প্রক্রিয়াটিকে।