বর্ণিল আয়োজনে হয়ে গেল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ৪৭তম আসর। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রের হল অব ফেম মিলনায়তনে বসে তারকাখচিত এই আসর। এদিন ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলোর বিজয়ীদের পুরস্কার দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গেলো চার বছরের মতো এবারও অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা। তাদের সঞ্চালনায় গানের সঙ্গে মঞ্চে পারফর্ম করেন সাদিয়া ইসলাম মৌ, নুসরাত ফারিয়া, মাহিয়া মাহি ও তমা মির্জা।
এছাড়াও সাইমন সাদিক-দীঘি, আদর আজাদ-পূজা চেরী, সোহানা সাবা-গাজী নূর ও জায়েদ খান-আঁচলের দ্বৈত পরিবেশনা ছিল এবারের আসরে। পুরো আয়োজনে নাচের কোরিওগ্রাফি করেন ইভান শাহরিয়ার সোহাগ। নাচের বাইরে ছিল গান পরিবেশনাও। প্রিয়তমা সিনেমার গানে মঞ্চ মাতিয়েছেন বালাম ও কোনাল।
এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অষ্টমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন নায়ক ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে করতে অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এই নিয়ে আটবার উপস্থাপনা করেছি আমি। এবারও আমার সঙ্গে ছিল পূর্ণিমা। আমরা দুজন এ নিয়ে চারবার উপস্থাপনা করছি।’
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরস্কারের এ আসরে যৌথভাবে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন চিত্রনায়িকা রোজিনা ও খসরু। এছাড়া ‘হাওয়া’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার ওঠে চঞ্চল চৌধুরীর হাতে। অন্যদিকে ‘বিউটি সার্কাস’ ও ‘শিমু’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার যৌথভাবে পেয়েছেন জয়া আহসান ও রিকিতা নন্দিনী শিমু।
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে দুটি ছবি ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ ও ‘পরাণ’। তবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদ্বয় শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কারটি পাননি। এই পুরস্কার অর্জন করেছেন ‘শিমু’ নির্মাতা রুবাইয়াত হোসেন। ‘অপারেশন সুন্দরবন’ ও ‘হৃদিতা’ সিনেমায় (এ মন ভিজে যায়) ও (ঠিকানাবিহীন তোমাকে) গানের জন্য যথাক্রমে শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে পুরস্কার নেন বাপ্পা মজুমদার ও চন্দন সিনহা। ‘পায়ের ছাপ’ সিনেমায় (এই শহরের পথে পথে) গানের জন্য শ্রেষ্ঠ গায়িকার পুরস্কার পান আতিয়া আনিসা। শ্রেষ্ঠ গীতিকারের পুরস্কার পান রবিউল ইসলাম জীবন, ‘পরাণ’ সিনেমার (ধীরে ধীরে স্বপ্নের পথে) গানের জন্য।
এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদানের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ১৩ সদস্যের জুরি বোর্ড গঠন করে। ২০২২ সালে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখায় ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩২টি পুরস্কার দেওয়া হয়।
এবার পুরস্কার হিসেবে সবাইকে দেওয়া হয়েছে ১৮ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ দিয়ে তৈরি একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও এককালীন নির্ধারিত পরিমাণ সম্মানী ও সম্মাননাপত্র। আজীবন সম্মাননার জন্য ৩ লাখ, শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালকের জন্য ২ লাখ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ১ লাখ টাকা।
সূত্র: ইত্তেফাক