বাংলাদেশে প্রথমবারের মত তিনজনের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর।
আক্রান্তদের মধ্যে দুজন পুরুষ, একজন নারী; তিনজনই বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে দুজন ইতালির দুটি শহর থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। এদের মধ্যে একজনের সংস্পর্শে আসায় পরিবারের আরেক সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা রোববার আইইডিসিআরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলেন, “তাদের সবার অবস্থাই স্থিতিশীল। তিনজনকেই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
ওই তিনজনের সংক্রমণের বিষয়ে শনিবার নিশ্চিত হওয়ার কথা জানিয়ে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, “দুজন দেশে আসার পর তাদের উপসর্গ দেখা দেয়। আমাদের হটলাইনে ফোন দিলে আমরা তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠাই। সেখানে দুজনের পজেটিভ আসে।
“তাদের কন্টাক্টে থাকা চারজনকে পরীক্ষা করেছি। একজন পজেটিভ। বাকিরা নেগেটিভ এসেছে।”
নভেল করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।
নভেল করোনাভাইরাস এর কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হল, যারা ইতোমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন বা এ ভাইরাস বহন করছেন- তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।
চিকিৎসকরা বলছেন, সংক্রমণ এড়াতে চাইলে ঘন ঘন হাত ধোয়া ভালো। সেই সঙ্গে নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রীও নিরাপদ রাখতে হবে।
গত ডিসেম্বরের শেষদিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, যা ইতোমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় ১০০ দেশ ও অঞ্চলে।
বিশ্বজুড়ে ১ লাখ ৫ হাজারের বেশি মানুষ এ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে; মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৫৯৫ জনের।
এর আগে সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইতালিতে সাতজন বাংলাদেশি নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও বাংলাদেশে এই প্রথম কারও মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়লো।
মেপ্র/আরপি