‘গেইল কেন অবসর নিচ্ছেন না’, এমন প্রশ্ন যারা করছেন তাদের মুখে আবারও চটেপাঘাত। ৪১ বছর বয়সী গেইল বুঝিয়ে দিলেন তিনি এখনও ফুরিয়ে যাননি। ক্রিকেটকে দেওয়ার মতো তার উইলোতে বহু কিছু এখনও গচ্ছিত রয়ে গেছে।
আজ সেন্ট লুসিয়ায় অস্ট্রেলিয়া- ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ যারা দেখেছেন তারা অত সহজে ভুলতে পারবেন না গেইল ঝড়। তার ছক্কাবৃষ্টি বেশ কয়েকটি রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে।
আগের দুই ম্যাচের মতো আজও অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হয়েছেন। টেনেটুনে ১৪১ রান তুলেছিল সফরকারীরা। সে রান তাড়া করতে নেমে ৫ ওভার আগেই ম্যাচ শেষ করে দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই জয়ের ফলে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নিয়েছে ক্যারিবীয়রা।
ক্রিস গেইলের ছক্কাবৃষ্টি ৩১ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটের জয় এনে দিয়েছে স্বাগতিকদের।
২০১৬ সালের পর থেকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে কোনো ফিফটি নেই গেইলের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলে এসেছে প্রায়। এমনিতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে প্রিয় ওপেনিংয়ে নামা হচ্ছে না। তাই আর দেরি করা ঠিক হতো না গেইলের জন্য। দীর্ঘদেহী এই খেলোয়ার আজ ঝড় তুলে প্রমাণ করেছেন তার আরেকটি বিশ্বকাপ খেলা কঠিন নয়।
বহুদিন পর দলে প্রত্যাবর্তনের পর ৯ ইনিংসে ১০২ রান তোলা গেইল আজ মেরেছেন সাতটি ছক্কা। ইনিংসে চারটি চারও ছিল। ইনিংসের ১২তম ওভারেই আউট হয়েছেন। কিন্তু এরমধ্যেই ৩৮ বলে ৬৭ রান তোলা হয়ে গেছে গেইলের। প্রায় পাঁচ বছর পর টি-টোয়েন্টিতে পাওয়া পঞ্চাশ এসেছে ৩৩ বলে।
প্রথম ম্যাচে খুব বাজে বল করা অস্ট্রেলিয়ান পেসার মিচেল স্টার্ক আজ দুর্দান্ত বল করেছেন। ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে ১ উইকেট পেয়েছেন এই ফাস্ট বোলার।
স্টার্ক ছাড়া অন্য সবাইকে পিটিয়ে তামা তামা করে দিয়েছেন গেইল। জশ হ্যাজলউডকে পেয়েই টানা চার বলে ৬, ৪, ৪, ৪ মোট ১৮ রান। এরপর কিছু সময় রয়েসয়ে খেলেন।
নবম ওভারে অ্যাডাম জাম্পাকে ছক্কা মেরে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ১৪ হাজার মাইলফলক পেরিয়েছেন ক্যারীবিয় এই দানব। ওই জাম্পাকেই ১১তম ওভারে টানা তিন ছকা মেরে ফিফটি পেরিয়েছেন। পরের ওভারে রাইলি মেরেডিথকে মেরেছেন আরেক ছক্কা। ওই ওভারেই অবশ্য ফিরে গেছেন গেইল।
ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচ শেষ। বাকি ৮ ওভারে ৩৩ রান দরকার ছিল। সেটা ১৭ বলেই তুলে নিয়েছেন নিকোলাস পুরান ও রাসেল।
টো টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন গেইলের মোট রান ১৪ হাজার ৩৮। তার ক্যারিয়ারে রয়েছে ২২টি শতক ও ৮৭টি অর্ধশতক। সর্বোচ্চ ইনিংস অপরাজিত ১৭৫। গড় ৩৭.৫৫ ও স্ট্রাইকরেট ১৪৬.০৬।
স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় গেইলের ধারেকাছে আর কেউ নেই। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৮৩৬ রান করেছেন আরেক ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার। কাইরন পোলার্ড রয়েছেন তালিকার দুই নম্বরে। ১০ হাজার ৭৪১ রান রান করে পোলার্ডের কাঁধে নিঃশ্বাস ফেলছেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার শোয়েব মালিক।
১০ হাজার ১৭ রান করে চতুর্থ স্থানে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার। এই তালিকার পঞ্চম স্থানে আছেন যৌথভাবে বিরাট কোহলি ও ব্রেন্ডন ম্যাককালাম।
দুজনের রান সংখ্যা ৯৯২২। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৪ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন গেইল। এদিন ম্যাচের সেরাও নির্বাচিত হন তিনি।