রাজধানীর শাহবাগ, মৎসভবন, আগারঁগাওসহ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বসেছে বিএনপি সরকারের ভয়াবহ পৈশাচিকতা ঘটনা নিয়ে বিলবোর্ড। সেখানে ওঠে এসেছে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপির জামায়াত নৃশংসতার চিত্র। ২০ বছর আগের সহিংসতার ছবি থেকে স্তম্ভিত হচ্ছেন পথচারীরা। রবিবার অফিসের পথে বের হওয়া মানুষ যেনো ফিরে যায় সেই নির্মম সময়ে।
শাহবাগের মতো ব্যস্ততম রাস্তাতে চলার পথে বিলবোর্ডের সামনে একটু দাঁড়িয়ে পড়ছেন কেউ কেউ। অনেকে একবার তাকিয়েই চোখ ফিরিয়ে চলে যান। চোখ ফিরিয়ে নিলেন কেন? জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান বলেন, ‘এই সহিংসতার চিত্র মনে গেঁথে আছে। তখন আমি বেশ ছোট। আমার এলাকাতে অনেক অত্যাচার নির্যাতনের নজির আছে। আমার প্রতিবেশিরা আমাদের বাসায় আশ্রয় নিয়েছিলো আগুন থেকে বাঁচতে। এসব আমরা ভুলে গেছি। নিজের কাছেই লজ্জা লাগলো এই ছবিটা দেখে।’ তবে মানুষকে এঘটনা দেখানো দরকার আছে বলেও তিনি মনে করেন।
মৎসভবন থেকে শাহবাগ হয়ে টিএসসি এই পথে যারা যাতায়াত করেন তাদের বড় অংশ শিক্ষার্থী। ২০০১ সালের অক্টোবরের সেই তাণ্ডব বা পুরো শাসনামলেই যে ভয়ঙ্গর ভীতি তৈরি করা হয়েছিলো সেসব তাদের স্মৃতিতে নেই। বিলবোর্ড দেখে তাদেরই কেউ কেউ কথা বলছিলেন মধুর ক্যান্টিনে বসে।
আঁগারগাওতে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মাহমুদুর রহমানের সঙ্গে। মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘এই যে মেট্রোরেলের স্থাপনা এর নিচে এই জঘন্য পোস্টারের মধ্য দিয়ে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়েছে, এই উন্নয়ন আমাদের চোখে পড়ে না। কিন্তু সেই যে জঘন্য দিনগুলো আমরা কাটিয়েছি, তা আমরা ভুলতে বসেছি। আমি কিছুক্ষণ পোস্টারটার দিতে তাকিয়ে আর পারিনি। কান্নায় চোখ ভিজে এসেছে।’
প্রতিবারই জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির হাত ধরে প্রকাশ্যে নাশকতা শুরু করে জামায়াত-শিবির। বিএনপি-ছাত্রদল-যুবদল প্রথমে সরকারবিরোধী অবস্থানের নামে দেশজুড়ে সন্ত্রাস শুরু করে, এরপরেই জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতন চালাতে থাকে। এ যেনো নিয়মে পরিণত হয়েছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় তাদের নিপীড়নের এই ধারা ২০১৪ সালে পেট্রোল বোমায় গণহারে মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো বর্বরতায় রূপ নেয়।