অমিত শাহের ফোন, জো বাইডেনের উপদেষ্টার বক্তব্যের পর এবারে নেতাদের বাড়ি বাড়ি হামলার গুজব ছড়াচ্ছে বিএনপি। তাদের এই গুজবের ভিত্তিতে প্রথম আলো সহ বিএনপিপন্থী গণমাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে আলোচনা চলছে।
বিএনপির দাবি, প্রায় একমাস ধরে সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হামলা হচ্ছে। অথচ গত এক মাসে একটি ঘটনাও পুলিশে অভিযোগ করা হয়নি। সাধারণত এসব ঘটনায় ভুক্তভোগী অথবা আশেপাশের বাড়ি থেকে জরুরি সার্ভিসে ফোন করা হয়। কিন্তু বিএনপির কথিত হামলার কোনো ঘটনায় কেউ জরুরি সার্ভিস ৯৯৯-এও কেউ কল করেনি। এসব ঘটনায় হতাহত হয়ে কেউ কোনো হাসপাতালে বা চিকিৎসাকেন্দ্রে সেবা নিয়েছেন, তেমন কোনো প্রমাণও মেলেনি।
সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের আগে বিএনপিও এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি। সংবাদ প্রচারের পরদিন গোপন আস্তানা থেকে ডিজিটাল বিবৃতি দিয়ে বিএনপি নেতা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেন, “সারা বাংলাদেশে বিএনপি নেতাদের বাড়িতে হামলার মহাউৎসব শুরু হয়েছে”।
সবচেয়ে বেশি হামলার দাবি করা হচ্ছে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ ও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায়। কিন্তু পুলিশ বলছে এব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ প্রণব চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের কাছে সিম্পলি একটা অভিযোগও যদি আসতো আমরা সেই অভিযোগটা নিয়ে এগোতে পারতাম। আমার থানার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। মৌখিক অভিযোগও করেনি।’ আর সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ জানান, বাড়িঘরে হামলার বিষয়ে তার থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি। কোনো মামলাও হয়নি।
২২ নভেম্বর ২০২৩ দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, “বাড়ি বাড়ি যারা হামলা করতে যাচ্ছে, তাদের মুখোশ পরা থাকে।” ২৬ নভেম্বর বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, “গত একমাসে সংঘটিত এসব হামলার ঘটনায় কোনো বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত, মামলা কিংবা কাউকে আটক করা যায়নি। রাতের আধাঁরে মুখোশ কিংবা হেলমেট পরে এসব হামলার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করতে পারছে না পুলিশ।”
প্রতিটি ঘটনাই “মুখোশধারী” সন্ত্রাসীরা ঘটালেও অভিযোগ করা হচ্ছে ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘বিএনপি গত এক মাসে ৩০০-র বেশি গাড়ি পুড়িয়েছে, ৪০০-র বেশি নাশকতা করেছে। বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও হত্যা করেছে। এই ঘটনাকে আড়াল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে বাড়ি বাড়ি হামলার ঘটনা সামনে নিয়ে এসেছে তারা।’
কয়েকটি গণমাধ্যমে এ নিয়ে খণ্ডিত সংবাদ প্রচারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনিবলেন, ‘বিএনপি যে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এবং হত্যা করছে, এ সংবাদটি আড়াল করছে এসব গণমাধ্যম।’