বিদায়বেলায় ফের চীনকে ধাক্কা দিল ট্রাম্প প্রশাসন। শুক্রবার হংকংয়ে বেইজিংয়ের দমননীতির প্রতিবাদে ছয় চীনা কর্মরর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল আমেরিকা।
এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, জানুয়ারি মাসের ৬ তারিখ প্রায় ৫০ জন মানুষকে গ্রেফতার করেছে হংকং পুলিশ। গণতন্ত্রকামী রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মীদের নিশানা করছে চীন। হংকং আইনসভার নির্বাচনে কারচুপি রোখার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ায় তাদের বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে হংকং আইনসভার ১৩ জন সাবেক সদস্য ও এক মার্কিন আইনজীবীও রয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর আরও জানিয়েছে, এমন অগণতান্ত্রিক কাজে জড়িত থাকার জন্য হংকং প্রশাসন ও চীনের ছয় কর্মকর্তার ওপর ভ্রমণ ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই তালিকায় সব থেকে উল্লেখযোগ্য নাম হচ্ছে সান ওয়েনকিং। হংকং স্বশাসিত প্রদেশের জাতীয় নিরাপত্তা দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর তিনি। এর আগেও বেইজিংয়ের নির্দেশে গণতন্ত্রের সমর্থকদের বিরুদ্ধে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি শাওমি-সহ একাধিক চীনা সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেনেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
পাশাপাশি সে দেশের তেল সংস্থা ‘চায়না ন্যাশনাল অফশোর অয়েল করপোরেশন’–এর ওপরও নিষেধাজ্ঞা বসানো হয়েছে, যাতে আমেরিকার কোনও সংস্থা বা ব্যবসায়ী তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেনে যুক্ত হতে না পারে। এর পাশাপাশি আরও ৯টি চীনা সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা বসিয়েছে পেন্টাগন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক মঞ্চের প্রতিবাদ হেলায় উড়িয়ে হংকং নিয়ে বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা বিল পাশ করে চীন। বিতর্ক উপেক্ষা করেই ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি লেজিসলেশন ফর হংকং’ শীর্ষক বিলটিতে সই করেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর ফলে স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশটির ওপর বেইজিংয়ের রাশ আরও মজবুত হয়েছে। তারপরই চীনের ওপর চাপ বাড়িয়ে হংকংয়ের ৩০ লাখ বাসিন্দাকে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করে ব্রিটেন।
শুধু তাই নয়, সদ্য হংকংয়ের ‘চিনপন্থী’ প্রশাসক ক্যারি লাম-সহ ১০ জন উচ্চপদস্থ চীনা কর্মকর্তার ওপর ভ্রমণ ও আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা চাপায় ওয়াশিংটন। হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে নিপীড়ন চালাচ্ছে বেইজিং যার জেরে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন।