বিষে ভরা বিশ্ব আজ!! লকডাউন নামের ঢিলেঢালা কারফিউ কে উপেক্ষা করে সকাল-সকাল ভাবলাম যায় একটু ঘুরে আসি খোলা হাওয়ায়।। মনে-মনে ঘোরাঘুরি করাটা আমার স্বভাব। গড়াই নদীর তীর ধরে হেঁটে যেতেই দেখি সামনে একটি জায়গা থেকে কাদের জানি কণ্ঠস্বর ভেসে আসছে, সামনে এগিয়ে আমি তো অবাক!! বাহ এখানে তো তারার মেলা বসেছে।
রবিবাবু, শরৎ বাবু, জীবনানন্দ বাবু, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, আলাউদ্দিন আল আজাদ, শওকত ওসমান, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, নীহাররঞ্জন গুপ্ত, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতি বাবু, লালন ফকির, এমন আরও অনেক কালজয়ী লেখক রা সব বসে আছেন। চাঁদের হাট যেন। তাদের আলাপচারিতার মাঝে হাসি আর আনন্দের কমতি নেই। কিন্তু আমি ভাবছি অন্য কথা! এই করোনার সময়ে, লেখকদের না আছে মাস্ক না আছে হ্যান্ড গ্লাভস, না আছে কোন সুরক্ষা সামগ্রী দূরত্বের কোনো বালাই নেই। আমি ওখানে দাঁড়িয়েই একজন সুফি ভদ্রলোককে দেখছিলাম অনেকক্ষণ থেকে, হ্যাঁ এই সেই বিষাদ সিন্ধুর লেখক মীর মশাররফ হোসেন। যার লেখা পড়ে বুঝেছিলাম বিধির বিধান অখন্ডিয়। কারবালা প্রান্তর এর যুদ্ধের কথা পড়েছিলাম।
কৌতূহলী মন আমার, আমি লেখককে ডেকে বললাম, এই মহামারীর সময় কেন আপনারা একত্রিত হয়েছেন?? এমন দিনে অন্তত একটি মাস্ক পরতে পারতেন সকলে। এমনসময় লেখকদের মাঝখান থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলে একজন বললেন, তোদের অসুস্থ পৃথিবীতে আমরা আর নেই রে!! হঠাৎ দূর থেকে আদম চাচার ডুগডুগির শব্দ ভেসে এলো আমি সম্বিত ফিরে পেলাম, চাচা বলছে এই যে খেলা, পরিবিবির মাজার দেখেন, হোসেনের তাবু দেখেন, এজিদের তাঁবু দেখেন, দেখেন দেখেন মক্কা-মদিনার খেলা দেখেন, বাইশকোপ দ্যাখেন।। যাকে আপনারা বলেন বায়স্কোপ।