কুমিল্লায় হোমনায় কলেজ পড়ুয়া বোনের সঙ্গে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠায় কসাই ভাই খুন করেছে সেই প্রেমিক যুবককে। উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামে ঘটে এই ঘটনা।
খুন হওয়া যুবকের নাম ফয়সাল। ফয়সাল নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি ও অপহরণ মামলার সূত্র ধরে তদন্তের পর কসাই শামীমকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আসামি স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হোমনা উপজেলার সাপলেজি গ্রামের আমিরুল ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন চারতলা ভবনের নীচতলা থেকে বালিচাপা ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত ফয়সাল হোমনা উপজেলার রাজনগর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হোমনার রাজনগর গ্রামের ফুল মিয়ার কলেজ পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে পার্শ্ববর্তী বাড়ির পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া ফয়সালের (২২)। তাদের এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারছিল না মেয়ের পরিবার। গত ৫ জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফয়সাল তার মামা নজরুল ইসলামের বাসার ছাদে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিল; একটা ফোন এলে সে চলে যায়। এর পর থেকেই ফয়সাল নিখোঁজ হয়। বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজি করেও তার সন্ধান মেলেনি। এ বিষয়ে গত ৭ জুন ফয়সালের বোন হোমনা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ১৩ জুন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের নির্দেশে হোমনা থানার পাশাপাশি মামলাটি ছায়া তদন্তে নামে ডিবি পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানী ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে মঙ্গলবার আসামি শামীমকে গ্রেফতারের পরই বেরিয়ে আসে ফয়সাল হত্যাকাণ্ডের তথ্য। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শামীম জানায়, বোনের সঙ্গে প্রেমের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ফয়সালকে হত্যা করেছে।
দুলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন সওদাগর বলেন, ‘তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়ের বাবা ফুল মিয়া পার্শ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার পাইকারচর গ্রাম থেকে এসে এখানে বসবাস করছে। সে হোমনা এবং বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় তিনটি হত্যা মামলার আসামি। তার শ্যালকও হত্যা মামলার আসামি। তারা পেশায় কসাই।
অভিযানে অংশ নেয়া জেলা ডিবি’র পরিদর্শক ইকতিয়ার উদ্দিন জানান, ‘খোঁজ নিয়ে ওই যুবকের সাথে একই গ্রামের একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারি। ঘটনার পর থেকে আত্মগোপানে ছিল মেয়ের ভাই শামীম। বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে।’
উদ্ধার অভিযান শেষে হোমনা-মেঘনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফজলুল করিম বলেন, ‘গত ৫ জুন ফয়সালকে কৌশলে নির্মাণাধীন ওই ভবনে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। ৭ জুন হোমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে আমরা তদন্তে নামি।’ সূত্র-বাংলাদেশ প্রতিদিন