ফুটফুটে তাবাসসুম। বয়স মাত্র ১১ মাস। এখনো কথা বলতে কিংবা হাটতে শেখেনি। কিন্তু নিয়তির পরিহাসে কঠিন এক রোগে আক্রান্ত হয়ে পুরো শরীর ব্যাথায় নীল হয়ে গেছে তার। ব্যাথার কাতরে রাতের অধিকাংশ সময় বুক ধরে কাঁদতে থাকে শিশুটি। শিশুর এই কষ্ট সহ্য করতে পারেন না তার দিনমজুর বাবা। মুছতে মুছতে চোখের পানি শুকিয়ে গেছে মা তানিয়া খাতুনের। শিশুটিকে নিয়ে পরিবারের অন্য সদস্য দাদা-দাদি, নানা-নানিসহ সকলেই কাতর। দিনমজুর বাবার সাধ আছে ভালোবাসার ধন শিশুকণ্যাকে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে তোলার। কিন্তু সাধ্য হয়ে উঠছে না।
মেহেরপুর সদর উপজেলার খন্দকার পাড়ার ইবাদুল ইসলামের মেয়ে তানিয়া খাতুনের সাথে বছর তিনেক আগে বিয়ে হয় একই উপজেলার শ্যামপুর নীলমনি পাড়ার কালামে ছেলে মাসুমের সাথে। ১১ মাস আগে তাদের কোল আলো করে শিশু তাবাসসুম পৃথিবীর মুখ দেখে। জন্মের পর থেকে ঠাণ্ডা, জ্বরে ভুগতে থাকে শিশুটি। আড়াইমাস বয়সে এক শিশু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হলে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায় তাদের হার্টে ছিদ্র রয়েছে। এর পর থেকে দিনমজুর বাবা শিশুটিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন চিকিৎসককে দেখিয়েছেন। তেমন কোন উন্নতি হয়নি। তবে অপারেশনের মাধ্যমে ভালো হওয়া সম্ভব বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তার জন্য লাগবে নুন্যতম তিন লক্ষ টাকা।
শিশুটির মা তানিয়া খাতুন জানান, রাত এলেই ওর কান্না শুরু হয়। রাতের অধিকাংশ সময়ই ব্যাথায় কাঁদে। শরীরের বিভিন্ন অংশ ব্যাথার কাতরে নীল হয়ে যায়। কান্নার সময় মাঝে মাঝে একাই বুকে হাত দিয়ে থাকে। মেয়ের কষ্ট সহ্য করতে পারিনা। অর্থের অভাবে ভালোমত চিকিৎসাও করাতে পারিনা।
শিশুটির নানি নাসিমা খাতুন জানান, জন্মের পর থেকে তাবাসসুমের ঠাণ্ডা, জ্বর, কাশি লেগেই আছে। এসবের ওষুধ কিনতেই ওর বাবা হিমশিম খায়। দিনমজুরের কাজ করে সংসার সামলানোয় কঠিন হয়ে পরে তাবাসসুমের বাবার। সংসার সামলিয়ে মেয়ের ওষুধের টাকা জোগাড় করাও কঠিন।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউণ্ডেশনের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কাজল আলী বলেন, শিশুটির ৪মিমি ছিদ্র দেখা গিয়েছে রিপোর্ট অনুযায়ী। নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে রিকভারী সম্ভব হতে পারে। যদি সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অপারেশন ব্যায়বহুল।
শিশু তাবাসসুম অন্যান্য শিশুদের মতই বেড়ে উঠুক এ পৃথিবীতে। সুস্থ হয়ে বাবা-মাসহ সকলের মুখে হাসি ফুটাক। শিশুটির চিকিৎসার্থে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারি আমরা। আমাদের সকলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সহযোগীতায় হাসি ফুটবে তাবাসসুমের। জয় হবে মানবতার। শিশুটিকে মানবিক সাহায্য করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন শিশুটির পিতার সাথে। মো: মাসুম- ০১৩১৩-২১৪১৪০ (বিকাশ)।