১৪৯৮ সালে পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-দা-গামা ভারতবর্ষে আসার সমুদ্রপথ আবিস্কার করার পর ফরাশি ও ইউরোপীয় বণিকদের এই উপমহাদেশে আগমনের আগ্রহ জাগে ১৫৯৯ সালে ২১৮ জন সদস্য নিয়ে লন্ডনে “দুঃসাহসী বনিক গোষ্ঠী নামে বণিক সংঘ গঠন হয়। ১৬০০ সালের ১লা ডিসেম্বর ” ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ” নামে মহারানী সনদ লাভ করে এবং রানী স্বয়ং কোম্পানির অংশীদার হন। ১৬১৩ সালে মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর এক ফরমানের মাধ্যমে সূরাটে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বানিজ্য কুঠি স্থাপনের অনুমতি দেন।
বিভিন্ন কারনে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে যার ফলে ১৬৮৬ সালে হুগলি,বালেশ্বর,হিজলি মোঘল দুর্গ আক্রমন ১৬৮৭সালে চট্রগাম আক্রমন করে পরাজিত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা এবং ১৬৯০ সালে মোঘল ও ইস্ট ইন্ডিয়ার সন্ধিচুক্তি সম্পাদিত হয়। ১৬৯৮সালে কোম্পানি কলকাকায় ফোর্ট উলিয়াম দুর্গ স্থাপন করে।
১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল সিরাজ -উদ-দৌলা বাংলা, বিহার, উড়িস্যার নবাব হিসাবে সিংহাসনে বসেন। মুলতো বিনাশুল্কে বানিজ্য কে কেন্দ্র করে নতুন নবাব ১৭৫৬ সালের ৪ জুন কাসিমবাজার কুঠি আক্রমন এবং ২০ জুন কলকাতা দখল করেন। শুরু হয় প্রাসাদ ষঢ়যন্ত্র ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশী যুদ্ধের পরাজয়ের পর ২৯ জুন ১৭৫৭ তে মীর জাফর পুত্র মিরনের নির্দেশে মোহাম্মদী বেগ নবাব সিরাজ কে নৃশংসভাবে হত্যা করে। শুরু হল পুতুল নবাবদের হাত ধরে ব্রিটিশ শাসন যা চলমান ছিল ১৯৪৭ পযন্ত।
মুলতো ১৭৬৪ সালে বক্সার যুদ্ধের মধ্যে ব্রিটিশ শাসনের সিমানা বৃদ্ধি পেতে থাকে, কিছুদিন না যেতেই বিভিন্ন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে ব্রিটিস হটাও আন্দোলন জোরদার হতে থাকে। শতাধিক বছর পথ পরিক্রমার পর ১৮৮৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর বোম্বে (মুম্বাই) এ বসে প্রতিষ্ঠা হয় “”ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস””।
১৯০৬ সালে সালে ঢাকায় বসে গঠিত হয় “” মুসলিম লীগ”। অল্পকথায় বলি মুলতো মুসলিম লীগ ও ভারতীয় জাতীয় কংগেসের রাজনৈতিক আন্দোলনের ফসল ১৯৪৭ সালের ভারত, পাকিস্থান স্বাধীনতা। জিন্নাহর দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে যথাক্রমে ১৯৪৭ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্ট জন্মলাভ করলো জিন্নার নেতৃত্বে পাকিস্থান ও নেহেরুর নেতৃত্বে ভারত।
আমরা হতভাগ্য জাতি হলাম পূর্ব পাকিস্থানেরর বাসিন্দা । শুরু হল নতুন খেলা রাষ্ট্রের শাসনভার পশ্চিমাদের হাতে থাকায় শাসনের নামে শোসন, যে কোন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি…!
১৯৫২ সালের সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতার বীজ বপন এবং১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তা অর্জন ছিল আমাদের পরাধীনতা থেকে মুক্তি।
১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে নির্বাচনে জয়লাভের পর গদিতে বসতে না দেওয়ায় ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক ভাষনের মধ্যে দিয়ে ববঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা ছিল বাঙ্গালি জাতির পরাধীনতা থেকে মুক্তির স্বপ্ন।
২৬ মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষনা পত্র পাঠের মধ্যে দিয়ে দিয়ে স্বাধীনতার পথে বাংলাদেশ । এবার সরকার গঠনের পালা
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর সাবডিবিশনে সিমান্তবতি গ্রাম বৈদ্যনাথ তলায় বাংলাদেশর স্বাধীনতার ঘোষনার আদেশ জারি করা হয় এবং ১৭ এপ্রিল এই প্রবাসি সরকার সফত গ্রহন করেন যা মুজিবনগর সরকার নামে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেয়। দীর্ঘ নয়মাস মহান মুক্তিযুদ্ধেরর মধ্যে দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর মানচিত্রে জায়গা করে নেয় প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। মেহেরপুরের মুজিবনগর হয়ে ওঠে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। স্বাধীনতার সূতিকাগার ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের রাজনৈতিকদের তৃর্থস্থান মুজিবনগর বর্তমানে বাংলাদেশেরর অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
লেখক: কলেজ শিক্ষক ও সাবেক প্রিন্সিপাল (ইন চার্জ), টি জে ডিগ্রী কলেজ, গাংনী, মেহেরপুর।