নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকার একটি রিসোর্টে হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক নারীসহ অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় ফেসবুক লাইভে এসে মামুনুলের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা সেই পুলিশ সদস্য গোলাম রাব্বানীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
এএসআই পদবির এই পুলিশ সদস্য কুষ্টিয়ার ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত ছিলেন। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এমন অপেশাদার বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর রোববারই তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন।
সোমবার সকালে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রত্যাহার করে তাকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। পেশার বাইরে গিয়ে কেন অপেশাদার আচরণ করেছে- এটা জানতে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার ও ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
এএসআই গোলাম রাব্বানীর গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলায়।
প্রত্যাহারের আগের দিন শনিবার ওই কর্মকর্তা পুলিশের পোশাক পরে ফেসবুক লাইভে আসেন। পরে তার লাইভটি ভাইরাল হয়ে যায়।
ফেসবুক লাইভে এসে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের গুণকীর্তন করে গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘কাল মামুনুল হক হুজুরের একটি ভিডিও দেখলাম। যে ভিডিওতে দেখা যায়, স্ত্রীকে নিয়ে একটা রিসোর্টে গেছেন তিনি। অধিকাংশ সাংবাদিক সেখানে চিল্লাপাল্লা করে তার কাবিননামা দেখতে চাচ্ছে। আমার প্রশ্ন- সাংবাদিককে এই অধিকার কে দিয়েছে। আপনি যে কাবিননামা দেখবেন, আপনাকে এই অধিকার কি রাষ্ট্র দিয়েছে? আমি তো পুলিশের চাকরি করি, আমার জানা নাই। ভণ্ডামির একটা সীমা আছে। যদি স্ত্রী ব্যতীত অন্য কাউকে নিয়ে যেত, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতো। মিডিয়ার মাধ্যমে এমন একটা আলেম মানুষকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ ধরনের হেনস্তা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, শনিবার বিকেলে রাজধানীর অদূরে সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে হেফাজত নেতা মামুনুল হক একজন নারীসহ অবস্থান করছেন এমন খবর পেয়ে স্থানীয় কিছু লোকজন, ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা রিসোর্ট কক্ষটি ঘেরাও করেন। যদিও মামুনুল হক সঙ্গে থাকা নারীকে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেন। পরে সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে হেফাজতের একদল নেতা–কর্মী, মাদ্রাসাছাত্র মিছিল নিয়ে এসে রয়েল রিসোর্ট নামের ওই অবকাশযাপন কেন্দ্রটিতে ভাঙচুর চালিয়ে মামুনুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।