ঝিনাইদহের শৈলকুপার মিঞা জিন্নাহ আলম ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আবারও তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক। কলেজের ইংরেজির প্রভাষক কোহিনুর আক্তারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার নওশীনা আরিফ স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রভাষক কোহিনুর আক্তারের অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট তাকে কলেজের বিএম শাখায় ইংরেজি প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসময় কলেজের উন্নয়ন ফান্ডে দেওয়ার কথা বলে কোহিনুর আক্তারের কাছ থেকে ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নেন অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলাম। যার মধ্যে ৭৫ হাজার টাকা, অধ্যক্ষ নিজের একাউন্টে নেন। ২০১৫ সালে বিএম শাখা থেকে সাধারণ শাখায় স্থানান্তর করার জন্য ৫ লাখ ও কলেজ জাতীয়করণের নাম করে আরও ২ লাখ টাকা নেন অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলাম।
ব্যাক ডেটের রেজুলেশন ও কাগজপত্র তৈরি করে ২০২১ সালে মোটা টাকার বিনিময়ে কোহিনুর আক্তারকে বাদ দিয়ে ইংরেজির প্রভাষকসহ ৩ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় । এই ঘটনায় শৈলকুপা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন কোহিনুর আক্তার। আদালত অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলামের বেতন-ভাতা তোলায় নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। কোহিনুর আক্তারের দায়ের করা হাইকোর্টের একটি মামলায় এই তিন শিক্ষকের নিয়োগ অবৈধ বলে ঘোষিত হয়। এর পর তরিকুল ইসলাম কোহিনুর আক্তারকে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রাণ নাশের হুমকি দিতে থাকে। এদিকে সিআর ৩৮৮/২১ মামলায় তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হলে শিক্ষানীতি মালা অনুযায়ী তরিকুল ইসলামকে বরখাস্ত করার নিয়ম থাকলেও সভাপতি মেরিনা খাতুন তাকে বরখাস্ত করেননি।
বিভিন্ন মামলায় অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলাম দোষি সাব্যস্ত হওয়ার ভয়ে দ্রুত কল্যাণ ভাতা ও অবসর ভাতা উত্তোলনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাকে সহযোগিতা করছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ভরত কুমার লস্কার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। এদিকে আরও অভিযোগ রয়েছে, ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও উমেদপুর ইউপির চেয়ারম্যান সাব্দার হোসেন মোল্লা মিথ্যা তথ্য দিয়ে এই কলেজের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন এই অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলামের যোগসাজসে।
সাব্দার হোসেন মোল্লা ও তার পরিবার এবং অধ্যক্ষ মিলে এই কলেজের বিভিন্ন খাত থেকে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। এলাকাবাসী তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন।