মাদক আইনে মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে গাংনী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুর ইসলামের বিরুদ্ধে সাংবাদ সম্মেলন করেছেন সদ্য হাজত ফেরত তিন যুবক ও তাদের পরিবার।
আজ সোমবার (১৩ জুন) সকাল ১০ টার দিকে মেহেরপুর জেলা প্রেস ক্লাবে এ সাংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
এরা হলেন, গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের রাকিবুল ইসলাম, আব্দুর রহমান লায়েছ ও গাংনী শহরের মহিলা কলেজপাড়া এলাকার শ্যামল হোসেন। এসময় তাদের পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভিকটিম রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, একটি মামলার তদন্ত করার কথা বলে আমাদের ডেকে নিয়ে সেই মামলার আসামী হিসেবে চালান দিয়েছেন। তিনি আমাদের সাথে প্রতারণা করেছেন। সে সময় আমরা নিজেকে নির্দোষ দাবী করি এবং আমাদের কেনো গ্রেফতার করছেন জানতে চাইলে সে আমাকে চড় থাপ্পড় মেরে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। এসময় আমাদের কাছে থাকা সাড়ে ১৭ হাজার টাকা, তিনটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও আব্দুর রহমান লায়েছের একটি ১৫০ সিসি পলসার মোটরসাইকেল জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে দফায় দফায় আমার কাছে থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করেন তিনি। পরে লাইছের মোটরসাইকেলটি ছাড়িয়ে নিতে সে ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন। পরে দরকষাকষির এক পর্যায়ে গাংনী পৌর সভার ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলমগীর হোসেনের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নিয়ে মোটরাসাইকেলটি ছেড়ে দেন তিনি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, নুর ইসলাম আমাদের থানায় এনে টাকার জন্য ব্যাপক মারধর করে। এছাড়া তার দাবীকৃত ৫ হাজার টাকা ঘুঁষ দিতে না চাওয়ায় তিনি আমাদের পরের দিন সকালে চালান না দিয়ে সারাদিন থানা হাজতে আটকে রেখে বিকালের দিকে আদালতে পাঠান।
তারা অভিযোগ করেন মাদক আইনে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছেন এসআই নুর । আমাদের প্রকাশ্যে শারীরিক এবং মানষিক নির্যাতন করে হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের অর্থ। আমরা গাংনী থানার এসআই নুর ইসলাম নুরের বিচার দাবী করছি।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুন বিকালের দিকে গাংনী থানার এসআই নুর ইসলাম নুর সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান চালিয়ে গাংনীর চোখতোলা নামক স্থান থেকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলামকে (২৪) কে ৫৬ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করেন।
রাকিবুল ইসলাম ও আব্দুর রহমান লায়েসকে বসুন্ধরা এলাকায় ফুড সিটি থেকে শ্যামল হোসেনকে গাংনী মহিলা কলেজ পাড়া এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে আটক করেন।
৫৬ বোতল ফেনসিডিল জব্দ দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে পরের দিন বিকালে মেহেরপুর আদালতে প্রেরণ করেন।
তবে গাংনী থানার এসআই নুর হোসেন তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি অভিযোগপত্রে যেটি লিখেছি সেটিই সঠিক।