দফায় দফায় চালের দাম বাড়ার যৌক্তিক কারণ খুঁজতে মিল মালিকদের ডেকে জরুরি বৈঠক করেছেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন। তবে চালের দাম বাড়ার বিষয়ে মিল মালিকরা দায় চাপালেন উত্তরবঙ্গের ধান ব্যবসায়ী ও মিল মালিকদের ওপর। মিল মালিকদের দাবি, উত্তরবঙ্গ থেকে ধান কিনে এনে কুষ্টিয়ার মোকামে চাল উৎপাদন করা হয়। উত্তরবঙ্গে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম বাড়াতে তারা বাধ্য হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলা বৈঠকে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুর রশিদসহ জেলা চালকল মালিক সমিতির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে চালের দাম নির্ধারণে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সিরাজুল ইসলামকে প্রধান করে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তানিমুল সিরাম, বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা রবিউল ইসলামসহ চারজন মিল মালিককে সদস্য করা হয়। চারজন মিল মালিক হলেন জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মিল মালিক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, আবদুল খালেক ও ওমর ফারুক।
বৈঠকে জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আবদুস সামাদ বলেন, চালের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তারা চালের দাম বাড়িয়েছেন। তার দাবি, ঢাকা থেকে ব্যাপকভাবে চালের ফরমায়েশ আসছে। গতকাল মোকামে কেজিপ্রতি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৫২ টাকা দরে।
চালকল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, উত্তরবঙ্গের ধানের ওপর আমাদের (কুষ্টিয়া মোকাম) চাল উৎপাদন নির্ভর করে। সেখানে ধান ব্যবসায়ী ও কৃষকদের কাছে প্রচুর ধান মজুদ আছে। তারপরও তারা প্রতিদিন ধানের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আজ (গতকাল) এক হাজার ৩০০ টাকা মণ দরে ধান কেনা হয়েছে। এই দামে ধান কিনে চাল উৎপাদন করলে কেজিপ্রতি চালের দাম মোকামে পড়ে ৫৮ টাকা। এরপরও মিল মালিকরা ৫২ টাকা কেজি দরে লোকসানে চাল বিক্রি করছেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে বলেন, আবদুর রশিদ যে দামে চাল বিক্রি করে, তার পেছন পেছন অন্যরাও ছোটেন। তিনি ঠিক থাকলে চালের দামও ঠিক থাকে। প্রত্যেকের কর্মকাণ্ড নিয়মিত নজরে রাখা হচ্ছে। অযৌক্তিকভাবে চালের দাম বাড়ানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, প্রশাসনকে না জানিয়ে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে। শুক্রবার থেকে কোনোভাবেই চালের দাম বাড়ানো যাবে না। বাড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।