মেহেরপুর-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা একটি স্বপ্ন, একটি উদ্দ্যেশ্য এবং আদর্শ নিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিলেন।
জাতীর জনকের ডাকে সারা দিয়ে সেই স্বপ্ন পুরণের জন্য মুক্তিযোদ্ধার নিজের জিবনকে বাজী রেখেছিলেন। সেই স্বপ্ন ছিলো একটি ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত, সুখি সমৃদ্ধ ও স্বাধীন সার্বভোম বাংলাদেশ মুক্তি পাবে।
এদেশের মানুষ আইনের শাসন ও তাদের নাগরিক সুবিধা সমানভাবে ভোগ করবে। সম উন্নয়নের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাবে দেশ। জাতীর জনক পাকিস্থানী হায়েনাদের হাত থেকে মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধাদের আহবান করেছিলেন।
আর সেই আহবানে সাড়া দিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা। আমি জাতীর শ্রেষ্ট সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের বুদ্ধি ও পরামর্শ নিয়ে উপজেলাকে সন্ত্রাসমুক্ত, সমৃদ্ধশালী আগামীর নতুন এক গাংনী উপজেলা গড়তে চাই।
শনিবার বিকালে বামন্দীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে শীতবস্ত্র চাদর বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন এসব কথা বলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চাদর বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মাস্টার, আওয়ামীলীগের বিশিষ্ট নেতা মনিরুজ্জামান আতু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক আবুল বাশার, বামন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম কমল।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ মোঃ নুরুল হুদার সঞ্চালনায় শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, গাংনী উপজেলা মুক্তিযুদ্ধ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার আমিরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা তাহাজ উদ্দীন প্রমুখ।
বামন্দী, মটমুড়া, কাজীপুর ও তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় চার শ মুক্তিযোদ্ধা ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের হাতে শীতবস্ত্র উন্নতমানের চাদর তুলে দেন এমপি খোকন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন আরও বলেন, এই বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, পৃথিবী যতদিন থাকবে, কেউ স্বীকার করুক আর নাই করুক মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরেই লিখা থাকবে। সারা বিশ্বের মানুষ আজ স্বীকৃতি দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা জাতীর শ্রেষ্ট সন্তান। আর এটিই হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের সর্ব্বোচ্ছ পরিচয়।
তিনি বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজনীতিতে দীর্ঘ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে আছি। আগামীতেও পাশে থাকবো।
তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বিগত সকল জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের প্রার্থীদের সহযোগীতা করেছেন।
তিনি বলেন, আমরা রাজনীতি করতে গিয়ে মামলা হামলার স্বীকার হয়েছি। বিরোধী দলের হামলায় গৃহহারা হয়ে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজেছি।বারবার কারাভোগ করেছি।আমার ও আওয়ামীলীগের পরিবারগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।আমি সে কথা ভুলে যায়নি। আমি আপনাদের লোক, আমি আপনাদের ছোট ভাই ও সন্তানতুল্য। বীর মুক্তিযোদ্ধার যে চেতনা নিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছেন আমি সেই চেতনার উপর শতভাগ আছি।
তিনি বলেন, শুধু মুক্তিযোদ্ধারাই নয়, আমার কাছে কাজের জন্য কেই এলে চেষ্টা করবো তাদের কাজ করার। বিগত দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন কাজ করেছেন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামীতেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে সকল মুক্তিযোদ্ধাকে সাথে নিয়ে কাজ করবো।
সাহারবাটি দুটি বৈদ্যভূমি ও বামন্দীতে একটি বৈদ্যভূমির জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সাহারবাটি দুটি বৈদ্যভূমি ইতোমধ্যে নির্মাণ হয়ে গেছে। বামন্দী বৈদ্যভূমিটি ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার জন্য কাজ শুরু হয়নি। জটিলতা কাটিয়ে অচীরেই নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এছাড়া সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১২ টি বীর নিবাস তৈরী শুরু হয়েছে।
বামন্দী থেকে কাজীপুর রাস্তাটি পূন: নির্মাণের কাজ অচিরেই শুরু হবে। বেতবাড়িয়া থেকে মধুগাড়ি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার, করমদী থেকে হিন্দা পর্যন্ত চার কিলোমিটার নতুন রাস্তা, করমদী পাগলার ব্রীজ থেকে ভোমরদহ পর্যন্ত রাস্তা করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের রাস্তার মোড়ে মোড়ে সোলার প্যানেল লাগানো হয়েছে।এছাড়া মাধ্যমিক স্কুল কলেজ, মাদ্রসাগুলোতে আজ নতুন নতুন ভবন শোভা পাচ্ছে।
মানুষে মানুষে শান্তি সুবাতস বইছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার কাছে মাস্তান চাঁদাবাজদের স্থান নেই। গ্রামগুলোতে ভায়ে ভায়ে ঝগড়া আর মাদকের মামলা ছাড়া অন্য কোনো মামলা নেই। দলে দলে কোনো সংঘাত নেই, অশান্তিও নেই। মানুষের মাঝে শান্তি থাকলে সমাজের উন্নয়ণ হবে।মানুষ নিরাপত্তার সাথে থাকলে তারা নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারবে।
লোভ লালশার উর্দ্ধে থেকে মানুষের কল্যাণে জন্য সামগ্রীক কল্যাণে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ব্যাক্তির কল্যাণের মাধ্যমে কখনো সমাজের কল্যাণ হতে পারেনা। সমাজের কল্যাণ হলে মানুষের কল্যাণ হবে। সে কথা ভেবে জাতীর জনকের কন্যা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।কষ্ট করছেন এদেশের মাটি ও মানুষের জন্য।