সাইকেল চালিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ২০ সদস্যের দল কলকাতা থেকে এখন বাংলাদেশে। উদ্দেশ্য, ২১ শে ফেব্রয়ারী প্রভাত ফেরিতে অংশ নেওয়া। আর এ জন্য তাদের সাড়ে ৫০০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে হবে। দর্শনা সীমান্ত হয়ে গত রবিবার সন্ধায় মেহেরপুর মুজিবনগর পৌছায় এই প্রতিনিধি দল।
বাংলা ভাষার বিকৃতি ঠেকানো, ভাষার শুদ্ধতা, মর্যাদা সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ওপার বাংলার কলকাতা থেকে আসা “ভাষার সূত্র” নামের সংগঠনের। গত রবিবার কলকাতা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সাইকেল শোভাযাত্রা শুরু করে। ২০১২ সাল থেকে বাংলা ভাষার বিকৃতি ঠেকানোর জন্য প্রতিবছর এ শোভাযাত্রা করেন তারা।
গতকাল সোমবার সকালে তারা মুজিবনগর দিয়ে শুরু করে মেহেরপুরের বিভন্ন যায়গা ঘুরে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে।
ভাষার সূত্র সংগঠনের দলনেতা বিপ্লব কুমার দত্ত বলেন, বাংলা শুধু কাটাতারের মধ্যেই বিভক্ত। ভাষা ও সংস্কৃতিতে আত্মার আত্মীয়। কাটাতারের বেড়াকে তারা ছিন্ন করে দুই বাংলাকে মেলবন্ধন ঘটাতে চান। বাংলা ভাষার জন্য যারা রক্ত দিয়েছন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই সাইকেল শোভাযাত্রা।
আরেক সদস্য স্বরস্বতী রায় বলেন, বাংলা ভাষার যে উৎপত্তি, বাংলা ভাষার যে প্রয়োগ, যে ব্যাখা সেটি অন্যান্য ভাষা থেকে হাজার গুণে সমৃদ্ধ। একমাত্র ভাষা বাংলা যার জন্য বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতিকে রক্ত দিতে হয়েছে।
১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো শুধুশুধুই বাংলাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। শুধু সংখ্যা ও গুণগত মান বিচার করে নয়, বাংলা ভাষা সবদিক থেকে সমৃদ্ধ। বাঙালি জাতি, বাংলা ভাষার চেতনা, বাংলা ভাষায় উদ্বৃত্ত হওয়া এবং মানুষকে সেগুলো জানানো।
সদস্য তপন কুমার রায় বলেন, বাংলা কখনও হয় না ভাগ, বাংলা ভাষায় আমরা এক। দুটো দেশের ভাষা এক সুতরাং আমরা কোন আলাদা জাতি নয়।
সদস্য সুদিপ্ত পাল বলেন, বাংলা ভাষার সুমহান ঐতিহ্য বাংলাদেশ বহন করছে। বাংলাদেশ একটি পবিত্র ভূমি যেখানে ভাষার জন্য মানুষ শহীদ হয়েছেন। ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একটি নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্মহয়েছিল। এ জন্য আমরা অত্যান্ত গর্ব বোধ করি। ২১ শে ফেব্রুয়ারী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সাইকেল শোভাযাত্রাটি কলকাতা প্রেসক্লাব থেকে আরম্ভ করে দর্শনা, মুজিবনগর, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ি, মানিকগঞ্জ হয়ে শহীদ মিনারে পৌছাবেন।
এ বছরের শোভাযাত্রাটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে উৎসর্গ করেছেন তারা।
মেপ্র/ইএম