মেহেরপুরের মুজিবনগর সরকারী ডিগ্রী কলেজের ১১জন প্রদর্শক ও কর্মচারীর প্রাপ্য টাইম স্কেল দিতে গড়িমসি ও উৎকোচ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (অতি. দায়িত্ব) আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এ কাজ পাইয়ে দিতে ১০ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছেন ভুক্তভোগীদের কাছে ঘুষ না দেওয়ায় কাগজপত্রের নানা ত্রুটি দেখানো হচ্ছে।
জানা গেছে, ‘আত্মিকরণ বিধিমালা ২০০০’ অনুযায়ী শিক্ষা অধিদপ্তর ২০১৮ সালের ১লা আগষ্ট এই টাইম স্কেল অনুমোদন করে। এই আদেশের ভিত্তিতে শিক্ষা অধিদপ্তর সহ সারাদেশের ১২ টি কলেজের ১৩০ জন চাকুরীজীবী এই প্রাপ্যতা অর্জন করেন। এরই মধ্যে অনুমোদিত টাইম স্কেল প্রায় সকলে পেয়ে গেলেও মুজিবনগর সরকারী ডিগ্রী কলেজের ১১জন প্রদর্শক-কর্মচারী তাদের প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বঞ্চিতরা হচ্ছেন- পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রদর্শক হাসানুজ্জামান, রসায়ন বিভাগের প্রদর্শক ওহিদুল ইসলাম, শরীর চর্চা শিক্ষক মো;আব্দুল হানিফ, কোষাধাক্ষ্য আকরাম আলী, অফিস সহকারি আসাদুল হক, অফিস সহায়ক আফাজ উদ্দিন, অফিস সহায়ক ফেরদৌস হাসান, মালি আজিম উদ্দিন জোয়ার্দার, পরিচ্ছন্নতা কর্মী আব্দুল খালেক, আয়া জেরিনা খাতুন, আয়া সুফিয়া খাতুন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় নির্বাচন কমিটির সুপারিশ মোতাবেক অধিদপ্তর ও অধিদপ্তরের আওতাধীন অফিস এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের প্রদর্শক ও তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের টাইম স্কেল মঞ্জুর করে। যার স্বারক নং- ৩৭.০২.০০০০.১০১.৩৯.০০১.১৮-৩৫২২৯/৬২, তারিখ-০১.০৮.২০১৮ ।
এক বছর দুই মাস আগের একটি সরকারী বৈধ আদেশ থাকা সত্বেও এই ১১ জন কর্মচারী তাদের ন্যায্য প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন । মাঝে উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকতা হিসাবে ২/৩ জন স্বল্পকালীন সময়ে বদলি হয়ে যান। এখন আবার বর্তমান দায়িত্ব প্রাপ্ত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার ঘুষের খপ্পড়ে পড়ে বিষয়টি ঝুলে আছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী প্রদর্শক হাসানুজ্জামান ও ওহিদুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন কলেজের টাইম স্কেল প্রাপ্তরা তাদের প্রাপ্য পেয়ে গেলেও মুজিবনগর উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার গুরত্বহীনতার কারণে আমরা পাচ্ছিনা। কাগজপত্রের ত্রুটি দেখিয়ে দিনের পর দিন
ঘোরাচ্ছেন এবং ১০ লাখ টাকা দিলে কাগজপত্র ঠিক করে টাইম স্কেল পাওযার ব্যাপারে কাজ করবেন বলে ঘুষ দাবি করেন (ঘুষ চাওয়ার রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে)।
তিনি আরো জানান, খুলনার দাকোপ কলেজ, নড়াইলের লোহাগড়া সরকারি আদর্শ
মহাবিদ্যালয়, ফরিদপুরের বীরশ্রেষ্ঠ আব্দুর রউফ কলেজসহ প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানের স্টাফরা টাইম স্কের পেযেছেন কিন্ত আমরা পাচ্ছিনা এর জবাব হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কাছে জানতে চাওয়া হলে হিসাবরক্ষন কর্মকর্তা রূঢ় হয়ে বলেন, সেসব স্থানে বদলি হয়ে বেতন ভাতা তোলেন।
কাগজ পত্রের ত্রুটির কথা বলছেন আবার টাকা দিলে সেগুলো বৈধ হযে যায় কিভাবে এমন প্রশ্ন করলে তিন চুপ থাকেন বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগীরা আরো জানান, বিষয় টি নিয়ে জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপির কাছে গেলে তিনি নিজেই হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা কে ফোন করেন কিন্তু ফোন ধরেন নি। পরে তিনি এ পি এসের মাধ্যমে মুজিবনগর ইউএনও কে বিষয়টি সমাধানের জন্য নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলামের সাথে ঘুষ চাওয়ার কথা যানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রসঙ্গক্রমে আমি টাকা চেয়েছি। তাদের কাগজ পত্রের ত্রুটি আছে যে কারণে এই মুহুর্তে টাইম স্কেল দেওয়ার কাজটি করা যাচ্ছেনা। তবে কাগজপত্র আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।
সময়মত তাঁরা তাদের পাওনা অর্থ পেয়ে যাবেন।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উসমান গনী জানান, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। যাতে উনারা দ্রুত প্রাপ্ত টাইম স্কেল পায় তার ব্যবস্থা করার জন্য তাঁকে বলেছি।
নিজস্ব প্রতিনিধি: