মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ, পিপু সদস্য ও কর্মচারীদের প্রতিনিয়ত প্রকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা সহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ এনে ইউনিয়ন পরিষদকে দুর্নীতিমুক্ত এবং একটি স্বচ্ছ ইউনিয়ন পরিষদ গড়তে চেয়ারম্যানের অপসারণ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ৩ নং বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের ১০ ইউপি সদস্য।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ৩৯ ধারামোতাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এক নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড সদস্য সোহরাব হোসেন সদস্যদের পক্ষ হতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
বক্তব্যে বলা হয়েছে, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগণ মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলাধীন ০৩ নং বগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্যবৃন্দ। গত ১১ ই নভেম্বর ২০২১ খ্রিঃ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার গত ২২ শে ডিসেম্বর ২০২১ খ্রিঃ শপথ গ্রহণ করি। শপথ গ্রহণ করিয়া দায়িত্ব গ্রহণ করার পর হইতে পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব আয়ুব হোসেন বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করিয়া আসিতেছে। তাকে কোন কিছুর বিষয়ে প্রশ্ন করতে গেলে সে ওয়ার্ড সদস্য সহ ইউনিয়ন পরিষদের সকল কর্মচারী এবং সেবা নিতে আসা মানুষদের সাথে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজহ দুর্ব্যবহার করেন।
আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারী সদস্যগণ তার এরুপ কার্যকলাপে বাধা প্রদান করিলে তিনি কোনরুপ কর্ণপাত না করিয়া তাহার লোকজন দ্বারা বিভিন্ন অপমানজনক কথাবার্তা সহ হাত পা ভাঙ্গা এবং মারধরের হুমকি প্রদান করে। পরিষদের সদষ্যদের কোনরুপ মতামত গ্রহণ না করিয়া চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাচারিতামূলক বিভিন্ন কার্যকলাপ নিজের খেয়াল খুশি মত বিভিন্ন মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপের সাথে যুক্ত আছে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্যরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চেয়ারম্যানের দুর্নীতির তদন্তপূর্বক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন এবং তাকে অপসারণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে গত বুধবার মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ১০ জন ইউপি সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছি।
এসময় বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন ওয়ার্ড সদস্যবৃন্দ তাদের সাথে একা একাত্মতা প্রকাশ করেন। বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, এই চেয়ারম্যান আমাদের সাথেও দুর্ব্যবহার করত। এই চেয়ারম্যানের কাছে আমরা আমাদের ৩২ মাসের সম্মানী ভাতা পাওয়া আছে। তিনি আমাদের বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে এই সম্মানী ভাতার টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমরা সেই সম্মানের ভাতার টাকা এখন ফেরত চাই।
বাগোয়ান ইউনিয়ন পরিষদের আরেক সাবেক সদস্য জাকির হোসেন বলেন আমরা চেয়ারম্যানের দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছি আমরা বিএনপির মেম্বার ছিলাম তাই আমাদের ৩২ মাসের সম্মানে ভাতার টাকা বিভিন্ন মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে সে আত্মসাৎ করেছে। একই ভাবে এই পরিষদের ১২ জন প্রাক্তন ওয়ার্ড সদস্যের সন্মানি ভাতার টাকা সে আত্মসাৎ করেছে। আমরা তার কাছে এই টাকা ফেরত চাই। এবং এই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তার অপসারণ চাই এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আমরা একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন,১ নং ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম,, ২ নং ওয়ার্ড সদস্য সিবাস্তিন মল্লিক, ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য রমজান আলী, ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য বাবুল মল্লিক, ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য ওমর ফারুক, ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য রিপন আলী,১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আফরোজা রোজ, ৪,৫,ও ৬ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য মাবিয়া খাতুন, সাবেক সদস্য নজরুল ইসলাম,শংকর বিশ্বাস,দিলিপ মল্লিক,লক্ষি মন্ডল,কোমরউদ্দীন সেলিম,বগা মোল্লা,আনারুল ইসলামসহ ১২ জন সাবেক সদস্য।
সংবাদ সম্মেলন শেষে বর্তমান ইউপি সদস্য ও সাবেক ইউপি সদস্যরা মিলে চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।