টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্প, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ির আয়োজনে,১৮ ই মার্চ শনিবার মুজিবনগরে আম্রকাননে ৩ দিনব্যাপী কৃষক সমাবেশ ও কৃষি মেলার উদ্বোধন করা হয়। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর ১ আসনের সাংসদ ফরহাদ হোসেন প্রধান অতিথি থেকে মেলার উদ্বোধন করেন ।
উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানানো হয় ১৮ মার্চ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত মেলা ও কন্দাল ফসল প্রদর্শনী করা হবে।বিভিন্ন সংবাদ পত্র,অনলাইন পোর্টালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রকাশিত সংবাদে ৩ দিন মেলা হবে সে তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া ব্যানারেও সে তথ্য দেওয়া ছিল। কিন্তু ১৮ মার্চ উদ্বোধনের পর আমন্ত্রিত অতিথি বৃন্দ চলে যাওয়ার সাথে সাথে মেলার স্টলসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেই উপজেলা কৃষি বিভাগ।
কি কারণে বন্ধ হলো এমন কথা জানতে চাইলে মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি বিভাগ এবং মুজিবনগর কৃষি বিভাগ থেকে তেমন কোন সদুত্তর দিতে পারিনি। কৃষি বিভাগের দাবি উর্ধতন কতৃপক্ষের আদেশেই মেলা বন্ধ করা হয়ছে।
কোন ঘোষনা ছাড়াই হটাৎ মেলা বন্ধ হওয়া ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এলাকার কৃষকরা। যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে সরকার সে উদ্দেশ্য সফল হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে।
মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান, মানিকনগর, ভবেরপাড়ার বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, উদ্বোধনের দিন শুনলাম তিনদিন থাকবে। কিন্তু গত রবিবার সকালে মেলা স্থলে গিয়ে কোন কিছুই দেখা যায়নি। কন্দাল ফসলের চাষ বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের বর্ধিত জনগোষ্টির খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং পুষ্টিমান উন্নয়ন করা। প্রকল্প এলাকায় কন্দাল ফসলের আবাদ বাড়ানো, বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত আলু, মিষ্টি আলু, গুলকচু, মুখীকচু, লতিকচু, কাসাভা ও গাছ আলুর প্রমানিতজাতগুলো সম্প্রসারণ করা। এছাড়াও সুবিধাবঞ্চিত ও সিডর-আক্রান্ত এলাকায় প্রশিক্ষন, উদ্বুদ্বকরণ, প্রদর্শনী কার্যক্রমরে মাধ্যমে দক্ষ জনবল সৃষ্টি করা। উন্নত জাতের মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন, বীজ সংরক্ষন ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বিদেশে কন্দাল ফসল রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা এই প্রবল্পের উদ্দেশ্য। কিন্তু মুজিবনগরের আম্রকাননে কৃষিমেলার হটাৎবন্ধ হওয়ায় এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য সফল হবে কিনা এমন প্রশ্ন অনেকের।
কন্দাল ফসল চাষের উপযোগী মাটি, জলবায়ু ও চাষের চাহিদার ওপর ভিত্তিতে দেশের আট বিভাগের ৬০ জেলার ১৫০ টি উপজেলাকে এই প্রকল্পের এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে। তার মধ্যে মুজিবনগর একটি।
মেহেরপুর কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ি এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৬ কোটি ৩১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় ৬ হাজার ৯শ ৮১ ব্যাচ কর্মকর্তা-কর্মচারি, কৃষক, স্টেকহোল্ডার প্রশিক্ষন দেয়া, ২ হাজার ৮৪৪টি কৃষক মাঠ দিবস, ৪৫০ ব্যাচ উদ্বুদ্ধকরণ ভ্রমণ এবং ৩০০টি কৃষিমেলার আয়োজন করার কথা। আগামী ডিসেম্বরে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার এবং মুজিবনগর উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব থাকা কৃষি অফিসার আলমগীর হোসেন জানান, সবার সাথে আলোচনা করা হয়েছে যেহেতু প্রতিমন্ত্রী মহোদয় থাকবেন বড় প্রোগ্রাম খরচ অনেক বেশি তাই একদিনে শেষ করা হয়েছে।
মেলা বন্ধের জন্য প্রকল্প পরিচালকের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। অথচ মেলায় ডেকোরেশনকারী ডেকোরেটরের মালিক শাহিন আলী বলেন, আমার সাথে কৃষি অফিসারের একদিনের চুক্তি ছিল। তাই উদ্বোধনের দিনই সব ভেঙে ফেলা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কৃষি অফিসের এক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, উর্ধতন কতৃপক্ষের নিদের্শেই মেলা বন্ধ করা হয়েছে।
কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মোখলেছুর রহমান মোবাইল ফোনে জানান, মেলা তো তিনদিন হওয়ার কথা। সময়ের আগের মেলা বন্ধ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তারপরও আমি উপজেলা কৃষি অফিসারের সাথে কথা বলে বিষয়টি দেখছি।