বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের কোনো উদ্ভাবন, মেধাস্বত্ব আবিষ্কার এবং বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতে সহযোগিতা করার বিধান রেখে ‘মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মেহেরপুর বিল ২০২৩’ পাস করেছে জাতীয় সংসদ।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনে আজ সংসদীয় কমিটির সুপারিশকৃত আকারে বিলটি পাস হয়। বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এর আগে বিলটির ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বিলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আদেশ-১৯৭৩ এর বিধানাবলি পরিপালন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। আচার্য নির্ধারিত শর্তে স্বনামধন্য একজন শিক্ষাবিদকে চার বছরের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগ করবেন। কোন ব্যক্তি একাধিক্রমে বা অন্য কোনোভাবে উপাচার্য হিসেবে দুই মেয়াদের বেশি সময়ের জন্য নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না। আচার্য যে কোন সময় উপাচার্যের নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
বিলে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ মোতাবেক ২-এর (২২) অনুচ্ছেদ যুক্ত করে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘বিজনেস ইনকিউবেটর’ স্থাপন করতে পারবে। “বিজনেস ইনকিউবেটর” অর্থ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্থাপিত বা পরিচালিত কোনো বিজনেস ইনকিউবেটর, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলবার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সকল সহযোগিতা প্রদান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থী কর্তৃক কোনো উদ্ভাবন, মেধাস্বত্ব আবিষ্কার বা প্রক্রিয়া, বাজারজাত এবং বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য সহযোগিতা প্রদান করিবে”। এছাড়া বিলে সংসদীয় কমিটির সুপারিশ মোতাবেক ‘শৃঙ্খলা কমিটিকে যৌন হয়রানি, সহিংসতা, নিপীড়ন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের কাছে সুপারিশ’ করার সক্ষমতা যুক্ত করা হয়েছে।
বিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কর্মচারীদের চাকরির শর্তাবলী নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বেতনভোগী শিক্ষক ও কর্মচারী, সংসদ সদস্য বা স্থানীয় সরকারের কোন পদে নির্বাচিত হতে প্রার্থী হতে চাইলে ওই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে ইস্তফা দেবেন।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রসরমান বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও পঠন-পাঠনের সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেহেরপুর জেলায় একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ এবং সম্প্রসারণ কার্যক্রমের অগ্রগতিকল্পে এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ইনকিউবেটর-এর মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি, কর্মসংস্থান সম্প্রসারণ করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দেশকে উন্নত দেশে রূপান্তর করার লক্ষ্যে মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা অতীব প্রয়োজনীয় ও যুক্তিযুক্ত।