অনেক বড় এরিয়া একটি থানার মাধ্যমে কাঙ্খিত নিরাপত্তা সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা এক্ষত্রে আরও একটি থানা চালু করা। যা হতে পারে বামন্দী অথবা সুবিধাজনক স্থানে। তেমনি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা দুটি বীজ ফার্ম আমঝুপি ও বারাদিকে আরও আধুনিকায়ন পদক্ষেপ গ্রহন।
মেহেরপুর ও গাংনী পৌরসভার আয়তন বৃদ্ধি করা। গ্রাম থেকে জেলা পর্যায়ে পরিকল্পিত আবাসন গড়ে তোলা, বহুতল ভবন নির্মাণে আধুনিক বিল্ডিং কোড মেনে চলে ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। মেহেরপুর ও গাংনী উপজেলা আধুনিকভাবে মুজিবনগর মডেল অনুসরণে উপজেলা অবকাঠামো নির্মাণ করা। আলু, পিঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, টমেটো, গাজর, আম, কাঁঠাল, দীর্ঘ মেয়াদী প্রক্রিয়াজাত এবং বৃহৎ আকারে পাট প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র সহ বিদেশে রপ্তানিকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন।
নিরাপদ খাদ্যের গ্রামীণ হাট নির্দিষ্ট স্থানে গড়ে তোলা। কৃষকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা । এছাড়া অবশ্যই মেহেরপুর জেলার বিসিক শিল্প নগরীকে আধুনিক উন্নয়নমুখী বাস্তবায়ন রূপ দেওয়ার নিমিত্তে আয়তন বৃদ্ধি, টেরিফ ফ্রি জোন ঘোষণা করা সহ সহজ শর্তে জমি ও ঋণ কর্মসূচি চালু করা। আন্তর্জাতিক মানের কৃষি শিল্প অঞ্চল গড়ে তোলা।
৭। সার্বিক উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত স¦য়ংসম্পূর্ণ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এই লক্ষ্যে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার সমন¦য়ে একটি ৫০ মেগোওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সুব্যবস্থা করা। পারিবারিক শেয়ারে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। জনগণের জন্য বিশুদ্ধ পানি বিদ্যুৎ জ্বালানী সুনিশ্চিত পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
ভোক্তা অধিকার সুনিশ্চিত করা। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় মাদক, ভেজাল ঔষধ, সার, বীজ, অস্ত্র, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, বেকারত্ব, স¦ল্পশিক্ষা, বাল্যবিবাহ এবং বিভিন্ন অপরাধ ও অপরাধী চক্র ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব রুখে দিতে সর্বমহলে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি, নিরাপদ সীমান্ত নিশ্চিত করতে হবে। এর জন্য প্রশস্ত বর্ডার বেল্ট পাকা রাস্তা তৈরি করা খুবই জরুরি। সর্বোস্তরে যোগ্য নেতা নির্বাচনের জন্য প্রক্রিয়া চালু করা। জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে যাত্রীছাওনি ও ওয়াশরুমের ব্যবস্থা।
রাত্রে নিরাপদ আলোয় পথ চলা সুনিশ্চিত করা। জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা। সন্ত্রাস, মাদক, ইভটিচিং, চাঁদাবাজ, অপরাধ প্রতিবাদ প্রতিরোধে পাড়া ভিত্তিক শান্তি প্রিয় নাগরিক কমিটি গঠন।
৮। ছাত্র ও যুব সমাজ একটি জাতির সেরা হাতিয়ার এবং শক্তি। তাদের নৈতিক আদর্শ, দেশপ্রেম প্রতিষ্ঠা, মেধা ও প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে ফ্রি ও অংশীদার ভিত্তিক মুক্ত চিন্তার কøাব, ব্লাড ব্যাংক, হেলপ ক্লাব, বাঙ্গালী সাংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্লাব প্রতিষ্ঠা কর্মসূচিসহ গণসচেতনতা মূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা।
মেধা ও প্রতিভা মূল্যায়নে সমাজের সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের নাম করণে বৃত্তি ফাউন্ডেশন চালু করা। তিন উপজেলায় পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি করে ইনডোর স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা করাসহ মেহেরপুর স্টেডিয়ামকে পূর্ণাঙ্গ রুপ দেওয়া। মেহেরপুর পৌর গড় পুকুর কেন্দ্রীক একটি আধুনিক পার্ক গড়ে তোলা যেখানে ওভার ব্রীজ, ওয়াকিং জোন এবং একটি জীমনেশিয়াম থাকবে। বি.কে.এস.পি.তে চৌকষ ছাত্রদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেনিং এর উদ্যোগ গ্রহণ।
মেহেরপুর সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় মানের করা। স্কুল কলেজ বাস সার্ভিস চালু করা। শিশু শিক্ষায় ভাল অবদান রাখা চলমান কিন্ডার গার্টেন গুলো যে সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তাদের আরও উৎসাহিত করে শিশু শিক্ষার মানকে আরও উন্নত করতে জোর সুপারিশ করা সহ সকল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার মান সুনিশ্চিত করা । এছাড়াও কোচিং ও গাইড বাণিজ্যে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। স্কুল ভিত্তিক ইতিহাস, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস গুলো নতুন মাত্রায় যথাযথ মর্যাদায় পালন। তিন উপজেলায় আধুনিক প্রতিবন্ধী স্কুল প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্নক চেষ্টাসহ তাদের জন্য একটি আর্নিং হাউজ প্রতিষ্ঠা করা।
৯। দ্রুতগতির প্রযুক্তির এই বিশ্বে টেকনিক্যাল মানব সম্পদ উন্নয়নে যুব উন্নয়ন নির্ধারিত ট্রেনিং সেন্টারের বাস্তবায়ন সহ এভাবে বিভিন্ন বিদেশের চাহিদা এমন ট্রেড শিক্ষা ও ভাষা শিক্ষার মাধ্যমে সরাসরি বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। ক্ষুদ্র সঞ্চয় ব্যাংক, দ্যা ল ক্লাব, হজ¦ কাফেলা, মাদক, ভেজাল খাদ্য, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে নাগরিক সেবা প্রদান, পার্ট টাইম আড্ডা জব নামে প্রতিষ্ঠান খুলতে হবে যেখানে ছাত্র সমাজ শিক্ষিত বেকার তাদের সময় ও মেধাকে অপচয় না করে পার্ট টাইম জব করে অর্থ ও জ্ঞান অর্জনের সুযোগ তৈরী করা।
১০। সেবা-আয়-স্বনির্ভরতা এই তিন নীতিতে ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতিটি পরিবার পূর্ণস্বনির্ভর হবেই এই লক্ষ্যে প্রতিটি পরিবারকে একটি বাড়ি একটি প্রতিষ্ঠানে রুপান্তরিত করা এবং একজন করে দক্ষ জনশক্তি বিদেশে পাঠানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা এবং সকলেই উন্নয়নে হবে অংশীদার। পরিবেশ রক্ষা এবং সবুজ মেহেরপুর গড়ে তুলতে পাঁচ কোটি পরিকল্পিত বৃক্ষ রোপণ এবং এ থেকে স্থায়ী ফান্ড গঠন। অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে, ঠিক সময়ে ঠিক কাজটি করতে হবে, হাতে সময় খুবই কম। দারিদ্রতা, বৈষম্য ও বিলাসিতা এই তিন অপরাধের জন্ম দেয়। যে কোন ভালকে স¦াগতম জানাতে হবে।
গর্বিত ১৭ই এপ্রিল চেতনায় সময়ের প্রয়োজনে আমাদের এই উন্নয়ন ভাবনা। আমাদের রাজটিকা সৌভাগ্যকে সর্বোত্তম ব্যবহার করে যার যার স্থান থেকে উন্নয়ন ইস্যুতে কাজ করতে হবে। ঐতিহাসিক কারণেই মুজিবনগর খ্যাত মেহেরপুর জেলার উন্নয়নে প্রতিটি সরকারকেই কাজে লাগাতে হবে। প্রতিটি দুয়ারে দুয়ারে এই আন্দোলন ও অধিকার তুলে ধরি এবং বাস্তবায়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই।
যারা মেহেরপুর উন্নয়নে ব্যক্তিগত, সংগঠন, গণমাধ্যম, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে অবদান রেখেছে এবং রেখে চলেছে তা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ ও সম্মান জানায়। আমরা চাই ২০৫০ সালকে সামনে রেখে রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত একটি উচ্চমানের মাস্টার প্লানে সকল পরিকল্পনা ও উন্নয়ন গড়ে উঠুক। আমরা স্থায়ী উন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ এবং গঠনমূলক সমালোচনায় বিশ্বাসী।
দলমত নির্বিশেষে সকলের সাথে উন্নয়নে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সহযোগী হিসাবে পাশে সবায়কে কাজ করতে হবে। যে কোন অন্যায় অবিচারকে প্রতিবাদ প্রতিরোধ করতে নির্ভীক কন্ঠস্বর হিসাবে মেহেরপুরবাসীকে কাজ করে যাওয়ার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।