সারা পৃথিবীর মানুষ যখন করোনার ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে নিজেকে সবার কাছ থেকে আলাদা করে রেখেছেন তখন আমাদের দেশের খেঁটে খাওয়া মানুষ ক্ষুধার হাত থেকে বাঁচতে করোনাকে আলিঙ্গন করে চলেছেন প্রতিনিয়ত।
সামাজিক দুরত্বতো দুরের কথা প্রায়ই চোখে পড়ে গায়ের সাথে গা ঘেঁষে ত্রাণ সংগ্রহ করতে মরিয়া দেশের কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষকে। যে দেশে অধিকাংশ মানুষকে নুন আনতে গিয়ে পান্তা ফুরোতে হয় সেই দেশে লকডাউন বা সামাজিক দুরত্ব মানানো কতটুকু সম্ভব?
মেহেরপুরের গাংনী পৌর সভায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে কর্মহীন মানুষের মাঝে শনিবার (০২-০৫-২০২০ ইং) সকাল থেকে প্রায় ৮শ’ কর্মহীন মানুষের মাঝে ১৫ কেজি করে চাউল বিতরণ করেন পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম। বিতরণ কালে নয়টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররাও উপস্থিৎ ছিলেন।
সুবিধাভোগি মানুষদের পৌর সভা থেকে সামাজিক দুরত্ব মেনে ত্রাণ নেওয়ার জন্য বারবার বললেও তাদেরকে কোনভাবেই মানানো সম্ভব হচ্ছেনা।
সুবিধাভোগি একজনের সাথে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আগে খিদি মারি, তারপর করোনা মাইরবো না হয় নিজে মইরব” (মেহেরপুরের আঞ্চলিক ভাষা)।
সুবিধাভোগিদের কাছাকাছি অবস্থানে দাড়ানোর ভয়বহতা বারবার পৌর কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হলেও তারা তা বুঝতে চাইছেনা। স্বয়ং মেয়র আশরাফুল ইসলাম নিজে মাইকে করে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেও বোঝাতে পারেনি। পরে তিনি পৌর কার্যালয়ের পিছনের দিকদিয়ে লাইন করে দশজন করে গেটের ভিতরে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চাউল বিতরণ করেন।
এদিকে সুবিধাভোগি কর্মহীনদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা অনেকেই একই সুরে বলেন করোনার চেয়ে ক্ষুধার জ্বালা ভয়ংকর। করোনা আমাদের কিছু করতে পারবেনা। বরং ক্ষুধায় আমাদের পঙ্গু করে দিবে।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আতাউল গণি বলেন, আমরা সকল জনপ্রতিনিধি সহ সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করতে। তারা সেভাবেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন গাংনী পৌরসভাতেও সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবুও অনেকে বাইরে যদি তারা দুরত্ব বজায় না রাখে তাহলে তাদেরকে বোঝানো সম্ভব নয়। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রতিনিয়ত প্রশাসনের সাথে পুলিশ বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।