সরকারি নিয়ম নীতি না মেনেই মেহেরপুরের বিভিন্ন বিভিন্ন হাট-বাজার ও পথে-ঘাটে অবাধে বিক্রি হচ্ছে নানা ধরনের যৌন উত্তেজক ওষুধ। মজমা বসিয়ে ক্রেতাদের আকর্ষণ করে নামহীন কোম্পানির এসব ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে। আর তা সেবন করে গ্রামের সহজ-সরল মানুষ জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রশাসনিক কোন পদক্ষেপ না থাকায় অবাধে এসব ওষুধ বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে প্রশাসন বলছে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, নিয়ম অনুযায়ী ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া ও চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ বিক্রি করা দন্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু তা মানা হচ্ছে না। ফুটপাথের হকাররা প্রকাশ্যে যৌন উত্তেজক পাওয়ার অয়েল, ডি বাজিকরণ, ম্যাক্স জেড, অ্যাপেক্স, ভিগোসা, লুমিসেক, ডেফরল, ভারতীয় যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট সেনেগ্রা, এডিগ্রা, মুনিস, ভিগো ফোর্ট ও টার্গেট এমনকি মহামারী করোনার ওষুধও বিক্রি করছে। তবে এসব ওষুধ সেবন করে কারো রোগ ভাল হচ্ছে কি না তা জানাতে পারেনি হকাররা।
ওষুধ বিক্রেতা ইমরান আলী জানান, বিভিন্ন কোম্পানির প্রচারে ও পেট বাঁচানোর জন্যই এসব ওষুধ বিক্রি করা হয়। ওষুধ খেয়ে মানুষ উপকার পায় বলেই এ ধরণের ওষুধ চলছে খুব বেশি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ কিছু বলে না। একই কথা জানালেন হকার আল মামুন।
তিনি আরো জানান, কোম্পানীর প্রচার ও হারবাল ওষুধ বিক্রির পাশাপাশি নিজের তৈরী ওষুধও বিক্রি করছেন অনেকে। যদিও ওষুধ প্রস্তুত এবং বিপণনের কোন অনুমতি নেই তাদের।
ওষুধ সেবন করে কেউ উপকার পেয়েছে কিনা তা কেউ বলতে পারেনি। তবে অনেকেই বিশেষ ও যৌণ শক্তি বাড়াতে এ ওষুধ কিনছেন। কোন উপকার পাচ্ছেন না বরং জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
ওষুধ ক্রেতা রুয়েরকান্দি গ্রামের বদর উদ্দীন জানান, তিনি ও তার বন্ধু হাটে গিয়ে হকারদের মজমায় গান শোনেন। সেসময় হকারদের মিষ্টি মধুর কথা শুনে সহজে আরোগ্য লাভের আশায় গোপন রোগের ওষুধ কিনে সেবন করেন। কিন্তু অসুখ সারেনি বরং আরো জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
একই গ্রামের আনারুল জানান, গ্যাস্টিকের ও শরীর ভাল রাখার জন্য দেহমুক্তি যৌবণ বাহার সালসা কিনে সেবন করেছেন। এতে তার হার্টের অসুখ দেখা দিয়েছে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এমকে রেজা জানান, ‘প্রেসক্রিপশন ছাড়া যৌণ রোগের ওষুধ সেবন করলে শরীরের স্বাভাবিক ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। পুরুষ-মহিলাদের মধ্যে সিংহ ভাগ লোক বিভ্রান্ত হয়ে যৌণ উত্তেজক ওষুধ সেবন করেন। এসব ওষুধ হৃদরোগ ও কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। দীর্ঘদিন ব্যবহারে দৃষ্টিশক্তি ও স্মৃতিশক্তি কমে যায়। এতে লিভার ও নার্ভ ড্যামেজ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
গাংনীর বিভিন্ন দোকান ও খোলা বাজারে অভিযান চালানো হয়। আগামীতে অভিযান চলবে এবং হকারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানালেন ড্রাগ সুপার মুহসিনিন মাহমুদ।