মেহেরপুরে সন্তান ও নাতীর অত্যাচার ও নির্যাতনের প্রতিকার ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে নাজেরা বেগম নামের এক বৃদ্ধা নারী আদালতে মামলা করেছেন। আজ রবিবার (৩১অক্টোবর) মেহেরপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জ্যেষ্ঠপুত্র সামসুল আলম পিন্টু ও নাতি (বড় ছেলের সন্তান) সালেহিন আলম অংকুরের নামে মামলাটি দাখিল করেন। সিআর মামলা নং ৩৮৪। ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধা মেহেরপুর শহরের ২নং ওর্য়াডের মৃত আবদুল কুদ্দুসের স্ত্রী।
নাজেরা বেগম তার লিখিত আরজিতে বলেন, আমি একজন বিধবা নারী। আমার জ্যেষ্ঠ পুত্র সামসুল আলম পিন্টু ও সালেহিন আলম অংকুর আমার নিজ সম্পতি বন্দক রেখে রুপালী ব্যাংক মেহেরপুর থেকে ৫ লক্ষ টাকা লোন নেয়। দীর্ঘদিন লোনের টাকা পরিশোধ না করে আমাকে ফেলে অন্যত্র চলে যায়। ব্যাংক লোনের সুদসহ মোট ১০ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে আমার জমি রক্ষা করি। এরপর আমার বড় ছেলে ও নাতি কয়েকজন গুন্ডা নিয়ে আমাকে শারীরীক ও মানসিক নির্যাতন করে। পরে গত ২৭/০২/২১ ইং তারিখে মেহেরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করি। যার নং ১৪৮৭। সাধারণ ডায়েরী করায় তারা বাপ ও বেটা মিলে কয়েক মাস চুপ থাকে। কিন্তু গতকাল শনিবার (৩০ অক্টোবর) পুনরায় হাতুড়ি লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্রসহ ১০/১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল আমার বাড়ি ভাংচুর করে এবং আমাকে হুইল চেয়ার থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়। এবং বলে আমার বাড়ির জমি তাদের নামে লিখে দিতে হবে। আমি নিজেকে বাঁচানোর জন্য চিৎকার করলে আমার অন্যান্য সন্তান ও প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে তাদেরকে জখম করে। স্থানীয়রা আহতেদের উদ্ধার করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে নামেজরা বেগমের বড় ছেলে পিন্টু বিষয়টি অস্বিকার করে বলেন, আমি টাকা নেবার বিষয়ে কিছুই জানিনা। তবে টাকা নিয়ে ছিল আমার ছেলে। আমি টাকা পরিশোধ করার সময় চেয়েছিলাম তারা আমাকে সেই সময় দেয়নি।
নাজেরা বেগম বলেন, আমার চার ছেলে ও দুই মেয়ে। আমার অন্যান্য ছেলেরা দেখভাল করলেও বড় ছেলে পিন্টু দেখাশোনা ও খোঁজ খবর রাখেনা। কিন্তুু সে আমাকে প্রায়ই নির্যাতন করে। আমি আমার জীবনের নিরাপত্তার জন্যই মামলা করেছি। নাজেরা বেগমের মেজ ছেলে সামসুজ্জামান রন্টু বলেন, মেহেরপুর শহরে একটি মার্কেট রয়েছে। সেই মার্কেটের জমি আমার মায়ের নামে। সেই জমির কাগজপত্র দিয়ে ৫লক্ষ টাকা লোন নেন আমার বড়ভাই পিন্টু । কিন্তুু টাকা পরিশোধ না করায় সুদ বেড়ে ১০ লক্ষ টাকা হয়েছিল এবং খেলাপি হয়ে জমি নিলাম হওয়ার কথা হচ্ছিল যার কারনে আমরা ১০ লক্ষ টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু সে টাকার একটিও টাকাও আমার বড়ভাই সহযোগীতা করেননি। এখন সে আবার ওই জমি জবর দখল নিতে আমাদের ও আমার বৃদ্ধা মাকে মারধর করছে। যার জন্য আমার মা বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছে।