মেহেরপুরে জনশুমারি ও গৃহ গণনা ২০২২ এর জেলা রিপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। একই সাথে বিবিএস প্রকাশিত প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহ গণনা ২০২২ শীর্ষক পুস্তকের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার সময় মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুস্তকটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
জেলাভিত্তিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মেহেরপুর জেলার মোট জনসংখ্যা ৭ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ তিন লাখ চার হাজার ৯৩ জন এবং নারী ৩ লাখ ৬৫ হাজার ২৩৭ জন। তৃতীয় লিঙ্গের হিজড়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২৬ জন। জেলাতে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৯৫১ জন লোক বসবাস করে। শহরাঞ্চলে জেলার মোট জনসংখ্যার ২২.৩৫ শতাংশ লোক বসবাস করে। জেলাতে মোট বস্তিবাসীর সংখ্যা ৫৭৩ জন এরমধ্যে পুরুষ ২৬৭ জন এবং নারী ৩০৬ জন। জেলাতে কোন ভাসমান জনগোষ্ঠী নেই।
জনসংখ্যার উপজেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যানে গাংনী উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৩ লাখ ২২ হাজার ৭০১, মেহেরপুর সদর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ৯০৩ জন এবং মুজিবনগর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১ লক্ষ ৫ হাজার ৭৫২ জন।
ধর্মভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায় জেলায় মোট মুসলিম ধর্মের অনুসারী ৬ লাখ ৯০ হাজার ৩৪৯ জন, হিন্দু ধর্মাবলির সংখ্যা মোট ৮ হাজার ৪৯৭ জন, খ্রিস্টান আছেন ৬ ৪৭৮ জন, বৌদ্ধ ধর্মীয় জনসংখ্যা ১৬ জন এবং অন্যান্য ধর্মের অনুসারী মোট ১৬ জন। জেলায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রতি হাজারে ৬৫ জন।
প্রতিবেদন বলছে, মেহেরপুর জেলায় অবিবাহিত পুরুষের সংখ্যা সংখ্যা ৯৬ হাজার৫৫২ জন এবং মোট ২ লাখ ৩৭ হাজার ৭২৫ জন পুরুষ বিবাহিত। ৩ হাজার ৭৭৫ জন বিপত্নীক , ২০ হাজার ৪০০ জন তালাকপ্রাপ্ত।
অপরদিকে জেলায় মোট অবিবাহিত নারীর সংখ্যা ৫৮ হাজার ৭৩ জন, মোট ২ লাখ ৬৫ হাজার ৮৯২ জন নারী বিবাহিত। বিধবা নারীর সংখ্যা ৩৫ হাজার ৫০১ জন এবং তালাকপ্রাপ্ত নারীর মোট সংখ্যা ৫৭ হাজার ৭০০ জন।
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, জেলাতে মোট সাক্ষরতার হার ৬৮.১৪ শতাংশ। ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের মধ্যে মোট ৬৩.৭৬ শতাংশ মানুষের নিজ ব্যবহারের মোবাইল ফোন রয়েছে। অন্যদিকে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে উল্লিখিত বয়সসীমায় ৩৫.৩৮ শতাংশ।
মোড়ক উন্মোচনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মো: শামীম হাসান। এছাড়াও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তানভীর হাসান রুমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাঃ আব্দুস সালাম আব্দুস সালাম এবং মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপ-পরিচালক মোঃ বসির উদ্দীন। এ সময় সেখানে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কাজী কাদের মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি, জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ এবং জেলা ও উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাগত বক্তব্যে মেহেরপুর জেলা পরিসংখ্যান ব্যুরোর ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোঃ বছির উদ্দিন বলেন, ‘এবারই প্রথম ডিজিটাল ভাবে জনশুমারি ও গৃহ গণনা সম্পন্ন করা হয়েছে। আমরা বর্তমানে যে সময়ে বাস করছি, সেখানে মুহূর্তেই তথ্য ও উপাত্ত পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ফলে, জনশুমারির ফলাফলে কোন অসামঞ্জস্যতা থাকলে কোন অসামঞ্জস্যতা থাকলে সেটা আলোচনা ও পরামর্শের মাধ্যমে চুড়ান্ত করা হবে।’