মেহেরপুর জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে কোরিয়া প্রবাসীর কাছে ৬০ লক্ষ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের ওই নারীসহ দুইজনকে গ্রেফতারের পর এমন তথ্য পেয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বগুড়া জেলার শাহাজানপুর উপজেলার কুড়িপাড়া সুজাবাদের মধ্যপাড়া এলাকার মৃত কলিমদ্দিন আকন্দের ছেলে আজাদুল ইসলাম ওরফে আজাদ (৪৬) ও তার স্ত্রী তহমিনা আক্তার (৩০)।
আজ বৃহস্পতিবার ভোররাত ৩ টার দিকে মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল আলমের নেতৃত্বে একটি টিম আসামিদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেন। পরে দুপুরে মেহেরপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পক্ষ থেকে প্রেস রিলিজ দিয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
ডিবির ওসি সাইফুল আলম বলেন, মেহেরপুর সদর উপজেলার বেলতলা পাড়া গ্রামের আয়ূব আলীর ছেলে সোহেল রানা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা পরিচয়ধারী মনিকা খ্তুনসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় ধারা ৪০৬/৪২০ পেনালকোড প্রতারণার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৫, তারিখ ১৮/০৭/২৩ ইং।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, তহমিনা আক্তার, নাজাতারা বেগম, আলিফা বেগম, রফিকুল ইসলাম, তানজিলা বেগম, আবু তালেব, মোছা: রেহেনা বেগম, জাহাঙ্গীর আলম, মোছা: ছাহেরা বেগম, মোছা: আনোয়ারা বেগম। এছাড়া অজ্ঞাত ৬/৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, বাদীর ভাই কোরিয়া প্রবাসি সাঈদ হাসান বাপ্পি ২০১৮ সালে কোরিয়াতে গমন করেন। সে সময় থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মনিকা খাতুন পরিচয়দানকারী একজনের পরিচয় হয়। প্রথমে গল্প আড্ডা মারলেও পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে মনিকা প্রবাসি সাঈদ হাসানের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে অল্প অল্প টাকা নেয়া শুরু করেন। পরে তার বাবার অসুস্থতা ও মৃত্যু, মায়ের অসুস্থতা ও মৃত্যু, বাবার জমি সংক্রান্ত জটিলতার নিরসন ও পুলিশের হাতে আটকের নাটক সাজিয়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। রেমিট্যান্স, এজেন্ট ব্যাংকিং ও বিকাশের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে এই টাকা হাতিয়ে নেন মনিকা ও তার লোকজন।সাঈদ হাসান বাপ্পিকে মামলার ভয় দেখিয়ে ও বিপদে ফেলার ভয় দেখিয়েও টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক চক্রটি।
অপরদিকে, মেহেরপুর সদর উপজেলার বাঁড়িবাঁকা গ্রামের মিলন হোসেনের দায়ের করা প্রতারণা মামলার আসামি সাইফুল ইসলামকে নিলফামারী থেকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।
ডিবির ওসি সাইফুল আলম বলেন, বাঁড়িবাগ্রামের ইবাদত আলী ও সাইফুল ইসলাম অংশিদারভিত্তিতে ব্যবসা করতেন। বিভিন্ন স্থানে মাল দিয়ে ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করে পালিয়ে যান সাইফুল ইসলাম। এই ঘটনায় ইবাদত আলী প্রতারণার অভিযোগ এনে ব্যবসায়ীক পার্টনার সাইফুল ইসলামসহ চারজনকে আসামি করে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে তার অবস্থান নিশ্চিত করে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।