জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতিমালা লংঘন করে এলাকার প্রভাবশালীরা নির্বিঘেœ ফসলি উর্বর কৃষি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের নামে ব্যাপক হারে মাটি উত্তোলন করছে। ফলে এলাকার সাধারণ জমির মালিকেরা চরমভাবে হতাশ। ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার পর তা পরিবহনের জন্য পাকা ও কাঁচা সড়ক ব্যবহার করা হচ্ছে। মাটি বোঝাই যন্ত্রদানব ট্রাক্টর চলাচল করার কারণে রাস্তায় মাটি পড়ে তা অন্যান্য যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। আর সড়কগুলো নষ্ট হওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণ।
প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ্য ভাবে ফসলি জমির মাটি সাবাড় করলেও জোরালো কোন পদক্ষেপ না নেয়ার কারণে জেলা জুড়ে চলছে অবৈধ মাটি উত্তোলন।
এতে দিন দিন কমে আসছে আবাদি জমি। বিশেষ করে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন করায় খাদ্য ফসল উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়তে যাচ্ছে। মেহেরপুর সবজি চাষ খ্যাত একটি জেলা। সবজির পাশাপাশি সব ধরনের ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। বছরের প্রায় সব সময় পাওয়া যায় সবজি। জেলার অর্থনীতি সমৃদ্ধ করছে সবজি চাষ। তবে আশঙ্কাজনকহারে আবাদি জমিতে পুকুর খননের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, প্রত্যেক দিন ৮০ থেকে ১০০ গাড়ি মাটি উত্তোলন করে সেই মাটি ট্রাক্টর দিয়ে বহন করে নেওয়া হচ্ছে আশেপাশের বিভিন্ন ভাটায়। মাটি কাটার কারণে আমাদের ফসলি জমিগুলো বিনষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া মাটি বহনের সময় যে পরিমান ধুলো উড়ছে তাতে করে রাস্তাতে চলাচল করা খুবই মুশকিল হয়ে পড়ছে। রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ধুলোতে যেমন নষ্ট হচ্ছে আশেপাশের পরিবেশ আবার ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা।
তারা আমাদের কোন কথায় কর্ণপাত না করে দিনরাত বিরতিহীন মাটি খনন করেই চলেছে। এভাবে মাটি কাটা চলতে থাকলে আমাদের জমিসহ আশেপাশের জমি ভেঙ্গে যাবে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার গোভীপুর গ্রামের কাউসার গোভীপুর-হরিরামপুর সড়কের পাশে জমির মাটি কেটে ভাটায় বিক্রি করছেন।
বুড়িপোতা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে প্রায় দশ বিঘা জমির মাটি কেটে মোটা টাকার বিনিময়ে ইটভাটায় বিক্রি করছেন জমির মালিক বাড়িবাকা গ্রামের বাবু হাজী।
এছাড়াও বাড়িবাকা গ্রামে বিপ্লব নামের এক ব্যক্তি একই কায়দায় মাটি বিক্রি করছেন ভাটায়। এলাকায় যেন পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। কৃষকরা না বুঝে যেমন হারাচ্ছেন তাদের উর্বর ফসলি জমি, অন্যদিকে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন এক শ্রেণির প্রভাবশালী মাটি ব্যসায়ীরা।