মেহেরপুরে সন্ত্রাস দমন আইনে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তাঁর স্ত্রী মোনালিসা হোসেন, ভাই সরফরাজ হোসেন মৃদুলসহ ১৬৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
সোমবার দুপুরে মেহেরপুরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ও জেলা জজ আদালতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী হাসনাত জামান বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মেহেরপুর সদর থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, মেহেরপুর পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনারুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আমাম হোসেন মিলু, বুড়িপোতা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহজামাল, শ্যামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি, বারাদি ইউপি চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, মোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল আনাম সাজেদুল, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুস সালাম বাধন, মেহেরপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন, ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ আবদুুল্লাহ বাপ্পি, ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল আশরাফ রাজিব, ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মঞ্জুরুল কবির রিপন, স্টেডিয়ামপাড়ার সবুজের ছেলে জয় খান, ওমর আলীর ছেলে মো: দুলাল, গোরস্থানপাড়ার মজিবর রহমানের ছেলে মো: বাবলু, হোটেল বাজারের বিপ্লবের ছেলে মোঃ রাতুল, ঘাটপাড়ার কালুর ছেলে মোঃ অনিক, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মুকুলের ছেলে মোঃ সুইট, ছাত্রলীগ নেতা আমদহ গ্রামের দরুদ আলীর ছেলে মোঃ কুতুব উদ্দিন, চকশ্যামনগর গ্রামের নিফাজ বিশ^াসের ছেলে শামারুল, খোকনের ছেলে মহিবুল, আব্বাসের ছেলে রাশিম, সরকারি কলেজের দাড়োয়ান নওশাদ বাবলু,দিঘীরপাড়ার হাসেম আলী, হোটেল বাজারের আব্বাস আলীর ছেলে মোঃ আক্কাচ আলী, ভূমি অফিস পাড়ার তুফানের ছেলে মোঃ আলিফ, বোসপাড়ার বাদশার ছেলে মোঃ স্বাধীন, ফুলবাগানপাড়ার জিয়ার ছেলে মোঃ সাজ্জাদ, শিশু বাগানপাড়ার গোমেজের ছেলে মোঃ সম্রাট গোমেজ, উজুলপুর গ্রামের আসাদের ছেলে মোঃ আকাশ, স্টেডিয়াম পাড়ার আলালের ছেলে মোঃ আসিক, টিএণ্ডটি রোডের মান্নানের ছেলে মোঃ শুভ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ জুয়েল রানা, এশিয়ানেট মোড়ের মকলেছুর রহমানের ছেলে মোঃ বায়েজিদ, শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রিয়াদ আজিম, নতুন পাড়ার কাদেরের ছেলে মোঃ হৃদয়, তাহের ক্লিনিক পাড়ার আয়ুবের ছেলে মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ, মোঃ মোমিনুল হায়দার মোমিন, জে আর কাউন্টার পাড়ার দুলুর ছেলে ইমরান, যাদবপুর রোডের মৃত পাচু শেখের ছেলে যুবলীগ নেতা সারাফত আলী, টিএণ্ডটি রোডের ছামুর ছেলে মোঃ জাহিদ, তাঁতীপাড়ার মৃত তজিম উদ্দিনের ছেলে শরিফত আলী, শেখ পাড়ার মৃত মাজেদের ছেলে মোঃ নুরু দর্জি, তাঁতীপাড়ার আক্কাস আলীর ছেলে রায়হান, আব্দুর রশিদের ছেলে নুরুজ্জামান রাজিব, মৃত রেজাউল হকের ছেলে মো: রিপন, আবুল হোসেনের ছেলে মো: হাবিব, জটা শাহের ছেলে শাহাজাহান, মফিজুর রহমানের ছেলে মিজান, বড়বাজারের আনারুল ভাংড়ির ছেলে শাওন, মৃত মাবুদের ছেলে মো: রবিন, মৃত নকিব হেলালীর ছেলে ইমরান হেলালী প্রিন্স, মুখাজীর্পাড়ার মিন্টু খার ছেলে জাহাঙ্গীর, ফুলবাগান পাড়ার উমর আলীর ছেলে শরিফ, সিন্দুর কোটা গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে রকিবুল, আমঝুপি শেখপাড়ার শরিফ উদ্দিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম সাগর, টিএণ্ডটি পাড়ার ছায়েম বিশ^াসের ছেলে রাহিনুরজামান পোলন (মাস্টার), নতুন পাড়ার মৃত ছামাদের ছেলে আশরাফ, চক্রপাড়ার কাওছারের ছেলে মো: তারিক, মালোপাড়ার বরকত আলীর ছেলে যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান হিরন, ভুমি অফিস পাড়ার মৃত বাক্কার চেয়ারম্যানের ছেলে সুইট, নজরুল ইসলামের ছেলে মোঃ বকুল, স্টেডিয়াম পাড়ার রমজান আলীর ছেলে মো: রানা, ভূমি অফিসপাড়ার নজরুল ইসলামের ছেলে মো: মিজান, ফতেপুর গ্রামের মৃত জটির ছেলে মিলন, নজরুল স্কুল পাড়ার মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে আবু হুরাইরা, বোসপাড়ার কায়দার ছেলে মোঃ আরিফ, স্টেডিয়ামপাড়ার মৃত মুক্তার আলীর ছেলে মোঃ আনারুল ইসলাম, শেখ পাড়ার নুরুল হুদার ছেলে মো: হেদায়েত, শ্রমিক লীগ নেতা রাশেদ লতিফ, তাঁতীপাড়ার বাবলুর ছেলে শিশির, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোঃ মাহফুজুর রহমান পলেন, বামনপাড়ার হযরত আলীর ছেলে মোঃ জুয়েল, ১ নম্বর ওয়ার্ডের আকতার শেখের ছেলে মো: সেলিম, ঘোষপাড়ার আখের আলীর ছেলে মো: হাসান, ১ নম্বর ওয়ার্ডের শামিমের ছেলে নয়ন, ঘোষপাড়ার সেকেন্দারের ছেলে মোঃ রাজ্জাক, আসান শেখের ছেলে নেহাল, ভুমি অফিস পাড়ার খবির শেখের রিন্টু রহমান, নতুন পাড়ার মৃত ইসলামের ছেলে শাহীন ইসলাম তানিম, ভূমি অফিস পাড়ার খবির শেখের ছেলে মো: তুফান, লর্ড মার্কেটের ঠিকাদার মোঃ আসলাম খান পিন্টু,নতুন পাড়ার জলিল শেখের ছেলে মো: কাদের, সিরাজের ছেলে মোঃ তানসেন, রফিকুলের ছেলে মোঃ ইব্রাহিম, ঘোষপাড়ার শ্রী গোপাল, রহমান ঘোড়ার স্ত্রী নাছিমা বেগম, মিশন স্কুল পাড়ার সোভন খান, পিয়াদাপাড়ার যুবলীগ নেতা ডালিম, জুয়েল রানা, স্টেডিয়ামপাড়ার রবিউল ইসলামের ছেলে মুকুল, নতুন পাড়ার জাহানের ছেলে মো: রাজিব, সবুজের ছেলে হৃদয়, ঘোষপাড়ার মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে আতাউর রহমান, কুতুবপুর গ্রামের গফুরের ছেলে রকিব, বিদ্যাধরপুর গ্রামের মৃত রহমতুল্লাহের মেয়ে হাসিনা খাতুন, মোজাম্মেলের ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোঃ ওমর ফারুক, রহমতুল্লাহের ছেলে মোঃ চাঁদ আলী,আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড ইব্রাহীম শাহিনের ছেলে তিশান, মেয়ে তিতলী, নতুন পাড়ার ধুলুর ছেলে মামুন, আমদহের ছেলে মৃত বরুহান আলীর ছেলে ফিরোজ আলী, নতুন পাড়ার আনারুলের ছেলে সাকিব, মোমিনের ছেলে আলা, কবি নজরুল সড়কের মৃত শফিউদ্দিনের ছেলে নাজিরুল ইসলাম, খান পাড়ার মৃত মনিরুল ইসলামের ছেলে জোহানী, নতুন পাড়ার হায়াত আলীর ছেলে সেলিম, জলিল কারির ছেলে মাসুদ, সুরাতের ছেলে শাহীন, দারিয়াপুরের কলিমদ্দিনের ছেলে হুমায়ন কবির, ভূমি অফিস পাড়ার নজরুল ইসলামের ছেলে মোঃ আবু, বোসপাড়ার বাহাদুর ড্রাইভারের ছেলে বাধন খান, ভুমি অফিস পাড়ার বাবলার ছেলে মাহফুজ, বুড়িপোতার রসিদুলের ছেলে রাশেদ খান, বাজিতপুর ক্যাম্পপাড়ার অদ্ভুতের ছেলে বাসারুল, হালদারপাড়ার সেলিমের ছেলে রবিন, শেখপাড়ার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে ফাহাদ, কুদ্দুসের ছেলে রুস্তুম, আমদহের আসিফ মীর, শাহজীপাড়ার হবির ছেলে রানা, কাশ্যবপাড়ার মিথেন, ঝাউবাড়িয়ার সৌরভ, দিঘীরপাড়ার আতিয়ার, মোঃ শিশির, ঘোষপাড়ার মোঃ বাদশা, কুলবাড়িয়ার মোঃ জুয়েল, মণ্ডল পাড়ার ছাত্রলীগ নেতা আবু মোরশেদ শোভন, উজুলপুরের মোঃ আকাশ, গোলামের ছেলে মোঃ বাঁধন, গাংনীর সেলিম, যুবলীগ নেতা সাজু, সিন্দুর কোটার মোঃ ইসমাইল হোসেন, হালাদার পাড়ার জাফর আলীর ছেলে মোঃ অনিক, ভুমি অফিস পাড়ার বাবলুর ছেলে মোঃ সোহাগ, বোসপাড়ার বাদশার ছেলে মোঃ স্বাধীন, কুতুবপুরের রকির স্ত্রী মোছাঃ রুমা খাতুন, পুরাতন পোস্টঅফিস পাড়ার লিখন, বোসপাড়ার মতি, আশকারের ছেলে হাসান, বেড়পাড়ার কাশেম কমাণ্ডারের ছেলে চুন্নি, পান্না, শেখপাড়ার মৃত কাকুর ছেলে সুমন, থানাপাড়ার মৃত দাউদ হোসেনের ছেলে মোঃ সেলিম, বলিয়ারপুরের বিল্লালের ছেলে মোঃ আনারুল, বেড়পাড়ার হোমিও চিকিৎ ইমদাদুম হক জীবন, কাশেম ডাক্তারের ছেলে জুয়েল, পিরোজপুরের আজাহারের ছেলে লালন, রবজেল মাস্টারের ছেলে সেলিম, মৃত মল্লিকের ছেলে মোঃ ডাবলু, রবজেল ধামার ছেলে বাবলু ধামা, মৃত কুদ্দুস মণ্ডলের ছেলে ই¯্রাফিল, মৃত খলিল বিশ^াসের ছেলে মোঃ সানি, আব্দুর রহমানের ছেলে মোঃ আতিয়ার, আজগারের ছেলে গাজী, মৃত কৃদ্দুস মেম্বারের ছেলে মোঃ ওদুদ।
মামলার বাদির আইনজীবী মারুফ আহমেদ বিজন বলেন, ১৬৬ জনের নামে একটি সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি আমলে নিয়ে বিজ্ঞ বিচারক সদর থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় প্রথমে ১৯৫ জনকে আসামি করা হয়েছে এমন গুঞ্জন শোনা যায় এবং তার একটি খসড়া এজাহারও মেহেরপুর প্রতিদিনে পৌছায়। কিন্তু পরবর্তিতে ১৬৬ জনকে আসামি করা মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কয়েকজন আইনজীবীর সাথে কথা বলা হলেও তারা পরিস্কার কিছু বলতে চাননি। মেহেরপুর প্রতিদিন তার অনুসন্ধানী টিম কাজে লাগিয়ে মামলার এজাহার সংগ্রহ করে। যেখানে ১৬৬ জন আসামির নাম উল্লেখ রয়েছে। যার মামলা নম্বর ০১/২০২৪, তারিখ ১৯/০৮/২০২৪ ইং।
মামলার বাদি হাসনাত জামান বলেন, আদালতে এজাহার জমা দিয়েছি। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়েছেন। এর বেশি কিছু জানিনা।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গত ৪ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র ও তাদের অভিভাবক এবং জন—সাধারণ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের অবস্থান কর্মসূচী পালন কালে মেহেরপুর কলেজ মোড়ে শান্তিপূর্ণ গণজামায়েত ও দাবীর পক্ষের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বক্তব্য পেশ করা অবস্থায় আসামীগণসহ অজ্ঞাত আরো ১০০ জন সহ অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ধারালো রামদা, কিরিচ, লোহার রড, ছোরা, চাকু, ডেগার, বাশের লাঠি সহ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ভয়ভিতি, খুন, জখম করিবার উদ্দেশ্যে মটর সাইকেলে চড়ে মহড়া দিতে দিতে উপস্থিত হয়। তখন আন্দোলনরত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র ও তাদের অভিভাবক এবং জনসাধারণ ভিতি সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং আসামীদের হামলায় এদিক—সেদিক ছোটাছুটি করাকালীন আসামীরা ছাত্র ও উপস্থিত জনতাকে খুন—জখমের হুমিক প্রদান করে। আসামীগণের প্রকাশ্য হুকুমে অন্যান্য আসামীগণ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে। ২য় ঘটনাস্থলে শহরের ভূমি অফিস মোড়ে শান্তিপূর্ণ গণজামায়েত ও দাবীর পক্ষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সময় ছাত্র ও তাদের অভিভাবক এবং জন—সাধারণ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। আসামীরা অজ্ঞাত শতাধিক অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ধারালো রামদা, কিরিচ, লোহার রড, ছোরা, চাকু, ডেগার, বাশের লাঠি সহ অবৈধ আগ্নেয় অস্ত্রসহ ভয়ভিতি, খুন, জখম করিবার উদ্দেশ্যে মটরসাইকেলে চড়ে মহড়া দিতে দিতে উপস্থিত হয়।