মেহেরপুরে ২০১৯ সালে ক্রসফায়ারে মোঃ মোসায়েদ হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে তৎকালীন পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন নাহারের আদালতে নিহতের পিতা মোঃ মসলেম আলী বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে এজাহার নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন মেহেরপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্বিক) আঃ মতিন, ডিবি ওসি ওবাইদুর রহমান, এ.এস.আই (নিঃ) মোঃ সাইদুর রহমান, রেজাউল হক, এস.আই আব্বাস, ডিবি মেজবাহ, ওসি রবিউল ইসলাম, এস.আই (নিঃ) বিধান কুমার বিশ্বাস, এ.এস. আই (নিঃ) সাইদুর রহমান, নায়েক আব্দুর রহিম, মোঃ ইকবাল হোসেন, মোঃ তোয়াজ আলী, সাধন কুমার, মিনহাজ, নারদ কুমার, এস.আই অর্জুন, সদর থানা এস.আই জিয়া, পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, তুফান, চঞ্চল, মোঃ সেলিম রেজা, কাজী খালেদ সাইফুল্লাহ, মোঃ আঃ হাদি, আবু সুফিয়ান, সোহাগ, বারিকুল ইসলাম লিজন, নিয়ত আলী।
মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, মৃত মোসায়েদ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বি.এন.পি এর একজন তৃনমূল পর্যায়ের কর্মী ছিল। এই মনোরাগে আসামীগণ বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসনে কর্মরত থাকায় আসামীগণ আওয়ামীলীগ দলীয় নেতা কর্মী হওয়ায় তাহাদের প্ররোচনায় মৃত মোসায়েদ কে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাদক মামলায় গেফতার দেখাইয়া আদালতের মাধ্যমে মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে প্রেরণ করতো।
২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ রাতে মোসায়েদ কে রাতে বাড়ী হইতে গ্রেফতার করিয়া মেহেরপুর সদর থানায় নিয়ে যায়। পরের দিন সকাল বেলায় আমি ও ১ নং স্বাক্ষী আমার মৃত ছেলের বউ খাবার ও নৃত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র নিয়ে ছেলেকে থানায় দেখতে যায় এবং ছেলেকে হাজত খানায় দেখতে পাই।
৩ তারিখে আসামীরাসহ অজ্ঞাত পরিচয়ে পুলিশ মেহেরপুর থানা হাজত খানা হইতে অজ্ঞাত স্থানে স্থানে নিয়ে যায় আওয়ামীলীগের তৃণমুল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মদদে আসামীরা আমার মৃত ছেলে মোসায়েদকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করিয়া গুলি করিয়া হত্যা করিয়াছে এবং তাহা জানাস্বত্বেও প্রকৃত ঘটনাটি ভিন্নভাবে প্রভাবিত করিবার উদ্দেশ্যে আমাকে কোন সংবাদ না দিয়ে লাশ মর্গে আনিয়া তড়িঘড়ী করিয়া সুরুতহাল ও ময়না তদন্ত করিয়া আসামীদের প্ররোচনায় আমার নিকট লাশ তড়িঘড়ী করিয়া লাশ প্রদানের নির্দেশনা দেয়।
আমি আসামীদের নিকট আমার মৃত ছেলে মোসায়েদ এর সুরুত হাল ময়না তদন্তের রিপোর্ট দাবী করিলে আসামীগণ তাহা দিতে অস্বীকার করে এবং আসামীরা আমাকে ভয়ভীতি দেখাইয়া বলে যে, এই বিষয় লইয়া কোন আইন পদক্ষেপ নিলে আমার মৃত ছেলে মোসায়েদ এর মত আমাকেও খুন করিয়া লাশ গুম করিয়া দিবে।
সেকারণে আমি হত্যার বিষয়ে ন্যায় বিচার পাইবার জন্য নালিশ করিতে ভীত হইয়া পড়ি। ০৫ ই আগস্ট ২০২৪ এর গণ বিপ্লবের পর দেশে ন্যায় বিচারের পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় আসামীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করিয়া বিজ্ঞ আদালতে অত্র মোকদ্দমা দায়ের করিতে বিলম্ব হইল।