মেহেরপুরে সেবিকা নার্গিছ খাতুন হত্যা শেষে লাশ গুমের মামলায় দুই জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রবিবার দুপুর ১২ টায় মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রিপতি কুমার বিশ্বাস এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আসামীদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির আরো কয়েকটি ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের একাধিক সাজা দেওয়া হয়েছে।
সন্দেহাতীতভাবে সকল অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে দন্ডবিধির ৩৬৪ ধারায় ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড এবং সেই সাথে ১০,০০০/- (দশ হাজার টাকা) করে অর্থদত্ত অনাসায়ে আরো ০৬ (ছয়) মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড, দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মৃত্যু দন্ড এবং সেই সাথে ২৫,০০০/- (পঁচিশ হাজার টাকা) করে অর্থদন্ড, দণ্ডবিধির ৩৭৯ ধারার ২ (দুই) বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় ৩ (তিন) বছর করে সশ্রম কারাদন্ড এবং সেই সাথে ৫০০০/- (পাঁচ হাজার টাকা) করে অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ০৩ (তিন) মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে আদালত।
দণ্ডিতরা হলেন- গাংনী উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের ফোরকান আলীর ছেলে বাশারুল ইসলাম ও জামির হোসেনের ছেলে ফজর আলী। মামলার অপর আসামি ইয়াকুব হোসেন মৃত্যুবরণ করায় তাকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। দণ্ডিত দুইজনই পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গাংনী উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের স্ত্রী নারগিছ খাতুন বামন্দি মাহী ক্লিনিকের সেবিকা হিসেবে চাকরি করতেন। ২০১৮ সালের ৫ আগষ্ট তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে বামন্দির আল ফালাহ ক্লিনিকে যোগদান করেন। ওই দিন তিনি বাড়িতে ফিরতে দেরি করায় তার মেয়ে তসলিমা খাতুনকে জানান, বামন্দির কবরি ক্লিনিকের সামনে আছেন বাড়ি আসতে দেরি হবে। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ থাকায় তার মেয়ে তসলিমা খাতুন গাংনী থানায় একটি জিডি করেন। এর পর থেকে নারগিছ খাতুন নিখোঁজ থাকেন। পরবর্তিতে ১৮ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী কওে তসলিামা খাতুন একটি অপহরণ মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই বিশ্বজিৎ কুমার তদন্তকালে সাহেবনগর গ্রামের বাশারুল ও ফজর আলীকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেওয়া তথ্য মতে ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি বাশারুলের বাড়ির সেফটি ট্যাংক থেকে নারগিছের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৬৪/৩৭৯/২০১ ধারায় বাশারুল ইসলাম, ফজর আলী ও ইয়াকুব হোসেনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কাজী শহিদুল হক এবং আসামী পক্ষে কামরুল হাসান ও আতাউর রহমান আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।
মামলায় রায়ে সন্তোস প্রকাশ করে নার্গিছ খাতুনের মেয়ে তসলিমা খাতুন বলেন, আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তি কার্যকর করা হোক।