নোংরা পরিবেশে খাবার পরিবেশন বন্ধ হয়নি মেহেরপুর শহরের কলেজ মোড় এলাকার ইয়ারুল হোটেলে।হোটেলটিতে শুধু নোংরা পরিবেশই নয়, অভিনব পন্থায় খরিদার সাথে মাংস বিক্রিতেও প্রতারনাও করছেন এই হোটেলটির মালিক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি টেবিলে খরিদারদের সামনে দুই পিচ করে মাংস দেওয়া আছে।গ্রাম থেকে আসা অনেক খরিদার এক পিচ মাংসের অর্ডার করলেও তার সামনে দুই পিচ মাংসের বাটি দিয়ে আসছেন হোটেল বয়। গ্রামের মানুষ দুই টুকরো মিলে এক পিচ ভেবে খেয়ে ফেললেই বিব্রত অবস্থায় পড়ছেন। এছাড়া কিছু খরিদার এক পিচ মাংস খেলেও দুই পিচ মাংসই ঝোল মাখানো হাতেই মাংসের দুই পিচই নেড়ে চেড়ে ভাতসহ রেখে দিচ্ছেন। বাটিতে রাখা ভাত ও ঝোল মাখানো হাতের সেই টিপে দেখা মাংসের অপর পিচটি তাদের হাড়িতে রাখছেন।r
আবার সেখান সেখান থেকে তুলে এনে একইভাবে অন্যান্য খাবার টেবিলে পরিবেশন করছেন। এছাড়া কিচেনরুমেও নানা ধরণের ময়লা আবর্জনার স্তুপ জমে আছে। হাত পরিস্কারের বেসিনেও ময়লা আবর্জনা রয়েছে। হোটেলের ৩/৪ জন বয়কে দেখা গেছেপ্রচন্ড গরমে ঘমার্ক্ত শরীরেই খাবার পরিবেশন করছেন। তাদের এই ঘাম হাত পর্যন্ত চুয়ে পড়লেও সেটা মুছার সময় পাচ্ছেননা তারা।
সামসুল ইসলাম নামের এক খরিদার বললেন আমি খেতে বসার আগেই এক পিচ মাংসের অর্ডার দিয়ে বসেছি। কিন্তু আমার সামনে ২ পিচ মাংস দিয়েছে। আমি ভাবলাম দুই টুকরো মিলেই হয়তো এক পিচ। দাম দিতে গিয়ে হোটেলের বয় জানালো দেড় প্লেট ভাত ও দুই পিচ মাংসের দাম রাখেন।
আমি হোটেল মালিককে বললাম আমি তো এক পিচ মাংস চেয়েছি।তিনি উত্তর দিয়েছেন দুই পিচ মাংস দিয়েছি, আপনি সেখান থেকে বাছাই করে এক পিচ মাংস খাবেন। আপনি দুই পিচ খাবেন কেনো? হোটেল মালিকের এমন আচরণ দেখে আমি লজ্জায় মান ইজ্জত বাঁচাতে দুই পিচের দাম দিয়ে চলে আসলাম। তিনি বলেন, আমার মত অনেক খরিদদারদের সাথেই এধরণের প্রতারণা করছেন হোটেল মালিক।
রাজিব হোসেন নামের এক খরিদদার বলেন, আমার পাশেই এক খরিদার তার ঝোল মাখানো (আইটু)নোংরা হাতে দুই পিচ মাংসই টিপে টুপে দেখলো। তারপর এক পিচ তুলে নিল। অন্যপিচ মাংসটি ওই বাটিতেই রাখলো। পরে সেই মাংসের পিচটি আবার তাদের হাড়িতে রেখে দিল হোটেল বয়। এটা দেখার পর হোটেলে খাওয়া আমার বন্ধ হয়ে গেলো।এভাবে নোংরা পরিবেশ থাকলে সেখানে খাওয়া সম্ভব, প্রশ্ন করেন তিনি।
এক পিচ মাংস চাইলেও দুই পিচ মাংস দেওয়া হচ্ছে কেনো এমন প্রেশ্নের জবাবে ইয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা দুই পিচ করে মাংস খরিদদার সামনে দিয়ে থাকি। খরিদদার তার পছন্দমত মাংসটি তুলে নেন। ঝোল মাখানো হাতে মাংস নেড়ে চেড়ে রেখে দেওয়া মাংস আবারো হাড়িতে রাখা প্রসঙ্গে তিনি কোনো উত্তর দেননি। বিষয়টি তার খাবার পরিবেশ বয়য়ের কাছ থেকে শুনতে চান।
উল্লেখ্য, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষেণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে গত বুধবার(১৭ আগষ্ট) দুপুরের অভিযান চালিয়ে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এছাড়া তাকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার প্রস্তত ও পরিবেশন করার নির্দেশ দেন। কিন্তু হোটেল মালিক ইয়ারুল ইসলাম আগের মতই পরিবেশে তার হোটেল ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।