নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ ৪ জনকে শোকজ করেছে মেহেরপুর-১ সংসদীয় আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি।
আজ বৃহস্পতিবার ৪ জানুয়ারি বিকাল ৫ টার সময় মেহেরপুর-১ সংসদীয় আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-২য় আদালতের বিচারক এইচ এম কবির হোসেন এ সকল শোকজ করেন।
জানা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ভগ্নিপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রফেসর আবদুল মান্নান, তার নির্বাচনী সহযোগী অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলী এবং মেহেরপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক শহিদুল ইসলাম পেরেশানকে পৃথক শোকজ করা হয়েছে। একই সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া হুমকি প্রদানের ভিডিও দেখে নৌকার প্রাথী ফরহাদ হোসেনের ভগ্নিপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসকে স্বপ্রণোদিত শোকজ করেছে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি।
স্বপ্রণোদিত শোকজে বাবলু বিশ্বাসকে বলা হয়েছে, ‘৩ জানুয়ারি তারিখের দৈনিক পত্রিকাসহ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত সংবাদের মাধ্যমে অবগত হয়েছি যে, আপনি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাস, চেয়ারম্যান, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদ ও সহ সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মেহেরপুর জেলা শাখা, বিগত ১ জানুয়ার রাত অনুমান ৯ টায় পিরোজপুর ইউনিয়নের একটি নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য প্রদানের সময় বলেছেন যে, পিরোজপুরের ৪ টি সেন্টারে আমি যেন দেখতে না পাই কোন এজেন্ট আছে ঐ চাপা দেওয়া (ট্রাক) প্রতীকের। তারা কিসের ভয় দেখায় আমি তো বুঝতে পারিনা। আমার চেয়ে মাস্তান বেশি আছে কেও? আমার চেয়ে যন্ত্রপাতি কারো বেশি আছে? আমার চেয়ে কি টাকা তাদের বেশি আছে? তাহলে কিসের ভয় দেখায়। যারা আমার কাছে কাজ করে খেতো কদিন আগে, তারা ভয় দেখায় কিসের। জমি ৩ বিঘা জমি কেড়ে নেবো।” আপনার উক্ত বক্তব্য সংসদ নির্বাচন প্রার্থীর (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর বিধি ১১ (ক) ও ১১ (ঙ) লঙ্ঘন।’ আগামী শনিবার ৬ জানুয়ারি সশরীরে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে শোকজের উত্তর দেয়ার জন্য আপনাকে নির্দেশ দেয়া হলো।
অপরদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর ভগ্নিপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সামাদ বাবলু বিশ্বাসের তিনটি লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনজনকে শোকজ করা হয়েছে।
অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রফেসর আবদুল মান্নান সম্পর্কে বলা হয়েছে ২ জানুয়ারি পিরোজপুর ইউনিয়নের কাঁঠালপোতায় এক নির্বাচনী জনসভায় তিনি বলেছেন, ‘দুর্গা ডোবার আগে এসে হাত মেলাও।’ এ কথাটি বলে তিনি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনেছেন।
অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলী সম্পর্কে অভিযোগে বলা হয়েছে, একই দিনে নির্বাচনী জনসভায় কাঁঠালপোতায় তিনি বলেছেন ভোটের পরের দিন সবকিছু দখল করে নেওয়া হবে এবং চাবি কেড়ে নেওয়া হবে।
আর জেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক শহিদুল ইসলাম পেরেশানের বিরুদ্ধে অভিযোগে বাবলু বিশ্বাস বলেছেন, শহিদুল ইসলাম পেরেশান ২ জানুয়ারী কাঁঠালপোতার জনসভায় ফরহাদ হোসেনকে ক্যাসিনো ও টেন্ডারের নিয়ন্ত্রক, হাজার কোটি টাকা পাচারকারী এবং জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মিনী সৈয়দা মোনালিসা ইসলামকে মেহেরপুরের ক্যাসিনো রানী বলেছেন।
প্রফেসর আব্দুল মান্নান, এ্যাডভোকেট মিয়াজান আলী এবং শহিদুল ইসলাম পেরেশানকে আগামী ৬ জানুয়ারি শনিবার দুপুর সাড়ে বারোটার সময় নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে স্বশরিরে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে শোকজের উত্তর দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।