করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বর্তমানে সবচেয়ে বিধ্বস্ত অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের। গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ডসংখ্যক ২ হাজার ৪৮২ জন মারা যায় এ মহামারীতে।
একদিন আগের ২ হাজার ৪০৭ জনের মৃত্যুর রেকর্ড ভঙ্গ হয় দেশটিতে। প্রতিদিনই রেকর্ড পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি। দিন দিন অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছে।
ক্রমাগত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্রে এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে শুধু নিউইয়র্কেই মারা গেছে ১১ হাজার ৫৮৬ জন।
এদিকে আক্রান্তের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়িয়ে গেছে সবাইকে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৩০ হাজার ২০৬ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৪৮ হাজার ৭০১ জন।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৩৭২ জন চিকিৎসাধীন, যাদের অবস্থা স্থিতিশীল। বাকি ১৩ হাজার ৪৮৭ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের অধিকাংশই আইসিইউতে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা নিউইয়র্কে। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৫২ জনসহ এ পর্যন্ত মারা গেছে ১১ হাজার ৫৮৬ জন। এবং গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ হাজার ৫২৫ জনসহ আক্রান্ত হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৪৮ জন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ও আমেরিকার শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্টনি ফসি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, করোনাভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুর সংখ্যা লাখ ছাড়াবে। গত মার্চে অবশ্য এক থেকে দুই লাখ মানুষ মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানাছিল হোয়াইট হাউস।
উল্লেখ্য, চীনের হুবেইপ্রদেশের উহান শহর থেকে এ প্রাণঘাতী ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়। তার পর সাড়ে তিন মাস পার হয়েছে। কিন্তু এখনও নিয়ন্ত্রণের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সারাবিশ্ব। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে ৭ হাজার ৯৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬০৩ জন।
এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৮৩ হাজার ৩৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৮৪ হাজার ৫১৫ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৫ লাখ ১০ হাজার ১৭১ জন।
সব মিলিয়ে বর্তমানে ১৪ লাখ ৩৮ হাজার ২৫৯ জন আক্রান্ত রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩ লাখ ৮৭ হাজার ১১৭ জন চিকিৎসাধীন, যাদের অবস্থা স্থিতিশীল। আর ৫১ হাজার ১৪২ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের অধিকাংশই আইসিইউতে রয়েছে।
এ ছাড়া ইতালিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৬৫ হাজার ১৫৫, মারা গেছে ২১ হাজার ৬৪৫ জন। স্পেনে আক্রান্ত ১ লাখ ৮০ হাজার ৬৫৯, মারা গেছে ১৮ হাজার ৮১২ জন।
জার্মানিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭৫৩, মারা গেছে ৩ হাজার ৮০৪ জন। চীনে আক্রান্ত ৮২ হাজার ৩৪১, মারা গেছে ৩ হাজার ৩৪২ জন। ফ্রান্সে আক্রান্ত ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৩, মারা গেছে ১৭ হাজার ১৬৭ জন। ইরানে আক্রান্ত ৭৬ হাজার ৩৮৯, মারা গেছে ৪ হাজার ৭৭৭ জন। যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ৯৮ হাজার ৪৭৬, মারা গেছে ১২ হাজার ৮৬৮ জন। বেলজিয়ামে আক্রান্ত ৩৩ হাজার ৫৭৩, মারা গেছে ৪ হাজার ৪৪০ জন।
নেদারল্যান্ডসে আক্রান্ত ২৮ হাজার ১৫৩, মারা গেছে ৩ হাজার ১৩৪ জন। সুইজারল্যান্ডে আক্রান্ত ২৬ হাজার ৩৩৬, মারা গেছে ১ হাজার ২৩৯ জন। তুরস্কে আক্রান্ত ৬৯ হাজার ৩৯২, মারা গেছে ১ হাজার ৫১৮ জন। ব্রাজিলে আক্রান্ত ২৮ হাজার ৭৪৬, মারা গেছে ১ হাজার ৭৫৭ জন।
কানাডাতে আক্রান্ত ২৮ হাজার ৩৭৯, মারা গেছে ১ হাজার ১০ জন। সুইডেনে আক্রান্ত ১১ হাজার ৯২৭, মারা গেছে ১ হাজার ২০৩ জন।
এ ছাড়া ভারতে মোট আক্রান্ত ১২ হাজার ৩৭০, মারা গেছে ৪২২ জন। পাকিস্তানে আক্রান্ত ৬ হাজার ৩৮৩, মারা গেছে ১১১ জন। বাংলাদেশে আক্রান্ত ১ হাজার ২৩১ জন এবং মারা গেছে ৫০ জন।
এ রোগের কোনো উপসর্গ যেমন জ্বর, গলাব্যথা, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট, শ্বাসকষ্টের সঙ্গে কাশি, এর কারণে স্বাদ ও গন্ধের অনুভূতিও কাজ না করতে পারে, তাই এগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সূত্র-যুগান্তর