বাংলাদেশে দুই কোটিরও বেশি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। কিডনির সমস্যা প্রথম দিকে বোঝা যায় না। তবে যখন সমস্যা প্রকোট হয়, তখন আপনার নানাবিধ শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।
ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান, পানি কম পান করা, প্রস্রাবে ইনফেকশন, ভেজাল খাদ্যগ্রহণ, অলস জীবনযাপন, কিডনিতে প্রদাহ, জন্মগত সমস্যা, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবনসহ বিভিন্ন কারণে এ রোগ হতে পারে।
অন্য সময়ের চেয়ে কিডনি রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি এখন অনেক বেশি। কারণ কিডনি রোগী যদি করোনায় আক্রান্ত হোন, তবে তার নানাবিধ শারীরিক জটিলতা দেখা দেবে এবং তার মৃত্যুও হতে পারে।
তবে এখন প্রশ্ন হলো– কিডনি রোগে আক্রান্ত সব রোগী কি বেশি ঝুঁকিতে?
কিছু কিডনি রোগী রয়েছেন, যাদের করোনা হলে মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
কাদের ঝুঁকি বেশি
১. যারা দীর্ঘদিন কিডনি রোগে ভুগছেন। তাদের করোনা হলে ফুসফুসে সমস্যা, রক্ত জমাটবাঁধা ও কিডনির জটিলতা বেড়ে যায়।
২. ডায়ালাইসিস করাচ্ছেন এমন রোগী। তাদের প্রেসার বেশি থাকে ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. কিডনি রোগী করোনায় আক্রান্ত হলে হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। শরীরে পানি জমতে পারে ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ফলে মৃত্যুঝুঁকিও বাড়ে।
৪. নতুন কিডনি সংযোজন করেছেন এমন রোগী।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ও অন্য আরও রোগে আক্রান্ত।
৬. কিডনির সমস্যা হলে যাদের চোখ, নাক ও মুখ ফুলে যায়। এসব কিডনি রোগীর করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বেশি।
কী করবেন
কিডনি রোগীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। ডায়ালাইসিস করাতে গেলে নিজের গাড়িতে যাতায়াত করতে পারলে ভালো। এ ছাড়া ভাড়া গাড়িতে গেলে জীবণুনাশক স্প্রে করে নিন। এ ছাড়া পিপিই, মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস পরুন।
সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ দিন ব্যায়াম করুন ও হাঁটুন। শাকসবজি, ফলমূল, মাছ ও মাংস খেতে পারেন। লাল চালের ভাত ও রুটি খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত মিষ্টি ও চর্বিজাতীয় খাবার খাবেন না।
নিয়মিত ঘুম থেকে উঠে দুই গ্লাস পানি পান করুন। কোমল পানীয় খাবেন না ও ধূমপান বর্জন করুন। নিয়মিত ৬ ঘণ্টা ঘুমান।
লেখক:
অধ্যাপক ডা. এমএ সামাদ
কিডনি রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান
আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল।
ধানমন্ডি, ঢাকা।
সূ্ত্র-যুগান্তর