লোহিত রক্তকণিকার আয়রনসমৃদ্ধ প্রোটিনের নাম হিমোগ্লোবিন। এটি গোটা দেহে অক্সিজেন বহন করে। মানুষের দেহে সঠিক পরিমাণে হিমোগ্লোবিন থাকা জরুরি। এর পরিমাণ প্রয়োজনের চেয়ে কমে গেলে দুর্বলতা, অবসাদ, শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, ক্ষুধামন্দা এবং হৃদস্পন্দনে সমস্যা দেখা দেয়। ভারতের ফোর্টিস হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ড. মনোজ কে আহুজা জানিয়েছেন, কিভাবে খাবারের মাধ্যমে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ানো যায়।
১. আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে : আয়রনের অভাবে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ হ্রাস পায়। সবুজ পাহাবহুল শাক-সবজি আয়রনে পূর্ণ থাকে। পালং শাক, বীট, মুরগির যকৃৎ, ডিম, আপেল, ডালিম, তরমুজ, মিষ্টি কুমড়ার বিচি, খেজুর, আলমন্ড, কিশমিশ, আমলকি ইত্যাদি খাবার খেতে হবে বেশি করে।
২. বেশি পরিমাণ ভিটামিন সি : আয়রন ও ভিটামিন সি গ্রহণে সমন্বয় করাটা জরুরি। ভিটামিন সি-এ এমন এক মলিকিউল রয়েছে যা আয়রনকে সহজে গ্রহণ করতে সহায়তা করে। এই ভিটামিন পেতে লেবু, কমলা, জাম্বুরা, পেঁপে, ব্রোকোলি, আঙ্গুর এবং টমেটো খেতে পারেন।
৩. ফোলিন এসিড খাওয়া বাড়াতে হবে : ফোলিক এসিড হলো ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স ভিটামিন। লোহিত রক্তকণিকা সৃষ্টিতে এর দরকার হয়। এতে এমনিতেই হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। সবুজ পাতাবহুল শাক, সবজি, শুকনো শীমের বিচি, গমের শীষ, বাদাম, কলা, ব্রোকোলি এবং মুরগির যকৃতে রয়েছে ফোলিন এসিড। লোহিত রক্তকণিকা সৃষ্টিতে বীটকে গুরুত্বপূর্ণ খাবার বলে তুলে ধরেন বিশেষজ্ঞরা।
৪. একটি আপেল বা আঙ্গুর : প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে নাকি কখনো ডাক্তারের কাছে যেতে হয় না। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। প্রতিদিন একটি করে আপেল খান। কিংবা অর্ধেক আপেল ও অর্ধেক বীটের জুস বানিয়ে দিনে দুইবার খেতে হবে। ডালিমেও রয়েছ আয়রন। এতে আদা বা লেবুর রস দিতে পারেন বাড়তি ফ্লেভারের জন্য। ডালিমে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার এবং প্রোটিন।
৫. বিছুটি পাতার চা : বিছুটি পাতার কথা শুনে ভয় পাবেন না। এটি একট হার্বাল উদ্ভিদ যাতে রয়েছে ভিটামিন বি, আয়রন এবং ভিটামিন সি। এসব তথ্য দেন ভারতের ন্যাশনাল হার্ট ইনস্টিটিউটের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ ড. আদর্শ কুমার। এক কাপ গরম পানিতে দুই চামচ শুকনো বিছুটি পাতার গুড়া দিন। এটা ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। সামান্য মধু মিশ্রিত করুন। প্রতিদিন এই চা দুই কাপ খাবেন।
৬. ব্যায়াম : মধ্যম বা ভারী ব্যায়ামের কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। যখন আপনি ব্যায়াম করেন, তখন দেহের অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এই অক্সিজেন পরিবহণের জন্য দেহে বেশি পরিমাণ অক্সিজেন উৎপন্ন হয়।