রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা দিয়েছেন অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তরা।
শনিবার সকালে তারা রাবি প্রশাসন ভবন ও ভিসি ভবনে তালা লাগিয়ে সামনে পাহারায় বসেন। সকাল ১০টায় প্রশাসন ভবনে ফ্যাইন্যান্স কমিটির একটি নিয়মিত সভা হওয়ার কথা ছিল। এটা আগেই টের পেয়ে অবৈধ নিয়োগ প্রাপ্তরা দলবেঁধে গিয়ে সকালে প্রশাসন ভবনে তালা মেরে ভবনের সামনে পাহারায় বসেন।
আগামী ২২ জুন বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কমিটিরও একটি সভা হওয়ার কথা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত ফ্যাইন্যান্স কমিটির সভাটি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাবি প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জনা তিরিশেক অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির ভেতরেই প্রশাসন ভবনে গিয়ে দুটি বড় তালা মেরে দেন। একই সঙ্গে আরেকদল গিয়ে তালা মারেন ভিসির বাসভবনের প্রধান ফটকে। সেখানেও তারা পাহারা বসান।
ফ্যাইন্যান্স কমিটি নিয়মিত একটি সভা হওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসন ভবনে তালা থাকায় কমিটির সদস্যরা ঢুকতে পারেননি। বিকল্প ভেন্যু হিসেবে ভিসি ভবনে হতে পারে-এমন আশঙ্কায় সেখানেও নিয়োগপ্রাপ্তরা ভিড় করেন।
রাবি প্রশাসনের একাধিক ব্যক্তি জানান, অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তরা প্রশাসনের কোন না কোন সূত্র থেকে গোপনে সভা হবে এমন খবর পেয়ে নিজেরা সংঘটিত হয়েই বৃষ্টির মধ্যেই শনিবার অতি ভোরে ক্যাম্পাসে জড়ো হন।
রাবির ভারপ্রাপ্ত ভিসি ড. প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা জানান, আমরা আগেই খবর পেয়েছিলাম অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তরা ক্যাম্পাসে ঢুকবে এবং ফ্যাইন্যান্স কমিটির সভাটি যাতে না হতে পারে সে চেষ্টা করবে। পুলিশকে আগেই জানানো হয়েছিল। শনিবারের এই বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমরা খবর পেয়েছিলাম ফ্যাইন্যান্স কমিটির সভাটি হয়ে গেলে আগামী ২২ জুন সিন্ডিকেট সভাও হয়ে যাবে। আগামী সিন্ডিকেট সভায় আমাদের সব নিয়োগ বাতিল করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ কারণে আমরা প্রশাসন ভবনে তালা দিয়েছি।
ভিসি বলেছেন, তিনি আমাদের নিয়োগের বিষয়টি দেখবেন। আমরা সে আশাতেই ক্যাম্পাসে আসছি।
উল্লেখ্য গত ৫ মে রাতে বিদায়ের প্রাক্কালে সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আব্দুস সোবহান ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়ে পরের দিন পুলিশ পাহারায় ক্যাম্পাস ছেড়ে যান। ওই দিনই শিক্ষা মন্ত্রণালয় সোবহানের দেওয়া নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করেন। গঠন করে তদন্ত কমিটি।
কমিটি গত ২৩ মে নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ দিয়ে প্রতিবেদন দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। এরপর থেকেই অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তরা ক্যাম্পাসে গিয়ে প্রশাসন ও ভিসি ভবনে তালা দেওয়াসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ড করছে।