করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছর বৈশাখী উৎসব আমাদের পক্ষে পালন করা সম্ভব হয়নি। এ বছর মাঝের কয়েকটি মাস করোনা সংক্রমণ কিছুটা কমে যাওয়ায় এবং জনজীবন অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে মনে হওয়ায় অনেকেই এ বছর পহেলা বৈশাখের উৎসব নিয়ে নানারকম পরিকল্পনা করেন।
কিন্তু হঠাৎ করে করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করায় এখন বৈশাখী উৎসব নিয়ে আমাদের সতর্ক হতে হবে।
জীবনে অনেকবার নিশ্চয়ই রমনায় কিংবা মঙ্গল শোভাযাত্রায় গিয়ে বর্ষবরণ উদযাপন করেছেন। বেঁচে থাকলে আরও অনেক বৈশাখ আসবে জীবনে। তাই গত বছরের মতো এবারও না হয় ঘরেই উদযাপন করুন বৈশাখ।
লকডাউন থাকুক বা না থাকুক, আমরা যার যার জায়গা থেকে সচেতন হই। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলি। বাইরে ঘুরতে না যাই। তবে চাইলে আমরা একটু ভিন্নভাবে ঘরেও পালন করতে পারি পহেলা বৈশাখ। সেক্ষেত্রে-
– প্রতি বছর বন্ধুদের সঙ্গে নববর্ষ উদযাপনের কারণে পরিবারের বড়দের বা বয়স্কদের সঙ্গে বিশেষ এ দিনটি কাটানোর সুযোগ হয় না আপনার আমার অনেকেরই। এবার তাদের সঙ্গে দিনটি উদযাপন করতে পারেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নববর্ষের সারাদিন টিভি দেখতে পারেন, নববর্ষের গান শুনতে পারেন। তারা যখন আপনার বয়সি ছিলেন তখন কিভাবে পালন করতেন দিনটি সেই গল্প শুনুন। দেখবেন মনটা নিমিষেই ভালো হয়ে যাবে।
– প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে নতুন পোশাক কেনা হয় নিশ্চয়ই। এবারও হয়তো নতুন পোশাক কেনার জন্য বাজেট বরাদ্দ ছিল। আফসোস না করে এবার সেই বাজেট থেকে সামান্য কিছু অর্থ আপনার আশপাশের কোনো অসহায় মানুষকে, আপনার বাসায় সারা বছর কাজ করছে যে খণ্ডকালীন গৃহকর্মী কিংবা এই ঝুঁকিপূর্ণ সময়েও যিনি আপনার বাসার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন সেই সিকিউরিটি গার্ড বা দারোয়ানকে দিন। দেশের পরিস্থিতি ঠিক হলে এ টাকা দিয়ে তার পরিবারের কোনো ছোট সদস্য থাকলে তাকে পোশাক কিনে দিতে বলুন বা তার প্রয়োজনমতো খরচ করতে বলুন। দেখবেন এই অর্থ হাতে পেয়ে তার চেহারায় যে খুশি ঝলকে উঠবে তা নিমিষেই আপনার বৈশাখ উদযাপন করতে না পারার কষ্ট ভুলিয়ে দিবে।
– ঘুরতে বের না হলেও বা অতিথি না এলেও ঘরটাকে কিন্তু এদিন বাঙালিয়ানা সাজে সাজাতে ভুলবেন না। কারণ নববর্ষে ঘরের বাঙালিয়ানা সাজের মাঝেও খুঁজে পাওয়া যায় বর্ষবরণের আনন্দ।
– নতুন পোশাক না কিনলেও এ দিনটিতে আলমিরা থেকে বের করে সাদা-লালের কোনো পোশাক পরে ফেলুন। পরিবারের সদস্যদেরও পরতে উৎসাহিত করুন। তারপর সবাই মিলে সারাদিন ঘরে আড্ডা দিন, ছবি তুলুন, গল্প করুন। মনটা ফুরফুরে লাগবে।
– এদিন পছন্দের কোনো পদ রান্না করে পরিবারের সদস্যরা মিলে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করুন। সম্ভব হলে আশপাশের অসহায় দু’একটি পরিবারকেও খাওয়ান। খণ্ডকালীন গৃহকর্মী, বাড়ির দারোয়ানকে খাবার পাঠাতে পারেন। ভাগাভাগির এ খাবার নতুন বছর উদযাপনে এনে দিবে অপরিসীম তৃপ্তি।