চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার চাকুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক বই ফিরিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি ওই বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণী ও চতুর্থ শ্রেণীর সকল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরকারের দেয়া বই ফিরিয়ে নেন।
গত মঙ্গলবার ও বুধবার সকালে ওই বিদ্যালয়ের দুটি শ্রেণীর সকল শিক্ষার্থী তাদের বই ফিরিয়ে দেয়। সরকারি ভাবে কোন নির্দেশনা না থাকলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বই ফিরিয়ে নেয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীতের ভিতর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় চাকুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফা খাতুনকে মৌখিক ভাকে শোকজ করা হয়েছে। শনিবার সরকারি অফিস বন্ধ থাকায় রোববার শোকজের কপি প্রধান শিক্ষকের নিকট পাঠানো হবে বলে জানান দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।
একাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার চাকুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আরিফা খাতুন ওই বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণী ও চতুর্থ শ্রেণীর সকল শিক্ষার্থীদেরকে চলতি বছরের তাদের ব্যবহৃত বই ফেরত দিতে বলেন। সকল শিক্ষার্থীদের তিনি সাফ জানিয়ে দেন যারা পুরাতন বই ফেরত না দিবে তাদেরকে পরবর্তী ক্লাসের নতুন বই দেয়া হবে না।
সেই অনুযায়ী গত বুধবার শিক্ষার্থীরা তাদের যার যার বই প্রধান শিক্ষকের নিকট ফেরত দেয়। বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারহানা বলেন, আমি বই দিতে না চাইলে আমাকে পরবর্তী ক্লাসের নতুন বই দেয়া হবে না বলে প্রধান শিক্ষক জানিয়ে দেয়। আমি বই ফেরত দিয়েছি। চাকুলিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরু গুলজার বলেন, আমার এক নাতনী ওই বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে লেখাপড়া করে। প্রধান শিক্ষক তার বই ফেরত নিয়েছে। শুনেছি সরকারি ভাবে বই ফেরত নেয়ার কোন নিয়ম নেই। তারপরও কেন বই ফেরত নেয়া হলো আমার জানা নেই।
এদিকে, সরকারি বই ফেরত নেয়ায় অত্র এলাকার অভিভাবকদের ভিতর ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চাকুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আরিফা খাতুনের মুঠো ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে দামুড়হুদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাকি সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বই ফেরত নেয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে, সরকারি ভাবে বই ফেরত নেয়ার কোন নির্দেশনা আমাদের দেয়া হয়নি। বিষয়টি শোনার পর আমি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আরিফা খাতুনকে মৌখিকভাবে শোকজের নির্দেশ দিয়েছি। যেহেতু আজ শনিবার অফিস বন্ধা সে কারনে আগামীকাল রোববার অফিস খোলার পর লিখিতভাবে শোকজের কপি প্রধান শিক্ষাকের কাছে পাঠাবো।