ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ চলছিল মিরপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে।
মাইকে ঘোষনা এলো ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ভাষণ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী সোয়াইব হোসেনকে প্রথম পুরষ্কার গ্রহণ করতে। সাদা পাঞ্জাবি পয়জামাতে কালো মুজিব কোর্ট পরিহিত সোয়াইব এলো পুরষ্কার গ্রহণ করলেন এমপির কাছ থেকে। ঠিক সেসময়ই এমপি কামারুল আরেফীন সেই ভাষন শুনতে মাইক্রোফোন এগিয়ে দিলেন।
মাইকে তখন শিশুকণ্ঠে ভেসে এলো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের কালজয়ী সেই ভাষণ। মুজিব কোট পরা শিশুটি তর্জনী উঁচিয়ে বলে চলেছে- ‘আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনারা সবই জানেন এবং বোঝেন। আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি- আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর ও যশোরের রাজপথ আমার ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে…’
ভাষণ চলছে। অডিটোরিয়ামে সুনসান নীরবতা। সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছে ভাষণের প্রতিটি কথা। যেন মর্মে মর্মে উপলব্ধি করার চেষ্টা করছে প্রতিটি অক্ষরের আক্ষরিক অর্থ। মাঝে মাঝে ভাষণের টার্ন বুঝে সেদিনের মতো চিৎকারও দিচ্ছিলেন কেউ কেউ। ভাষণের সেই মুহূর্তটি মোবাইল ক্যামেরায় ধারণ করে নিয়েছেন উপস্থিত প্রায় সবাই।
‘প্রত্যেক গ্রামে, মহল্লায়, ইউনিয়নে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম কমিটি গড়ে তুলুন। হাতে যা আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকুন। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেবো। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’-ভাষণ শেষ করেই তারকা বনে যায় শিশুটি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কামারুল আরেফীন তার ভাষণে খুশি হয়ে তাকে পুরষ্কৃত করেন।
মিরপুর উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া-২(মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সংসদ সদস্য কামারুল আরেফিন।
মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিরপুর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জোয়ার্দার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মর্জিনা খাতুন,উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন,মিরপুর থানা অফিসার ইনচার্জ মোস্তফা হাবিবুল্লাহ সহ উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ কীভাবে শেখা হলো- জানতে চাইলে সোয়াইব বলেন, ‘আমি শিখেছি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুনে। অনেক চেষ্টার পর আমি এটা মুখস্ত করতে পেরেছি। এটা শিখতে আমার প্রায় দুই মাস সময় লেগেছে।’ ভাষণ শুনতে শুনতে ভাষণটি মুখস্থ করার অনুপ্রেরণা পেয়েছে বলেও জানান তিনি।
৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছি। কিন্তু পুরষ্কার নিতে এসে স্বয়ং এমপি মহোদয় সহ অনেকের সামনে ভাষণটি সবার মাঝে তুলে ধরে খুব আনন্দ লেগেছে বলে অভিব্যক্তি প্রকাশ করে সোয়াইব।