ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কুষ্টিয়া প্রধান সেচ খাল (ইরি খাল) এর কয়েক কিলোমিটার এলাকার লাখ লাখ টাকার ফলদ গাছ নিলাম ছাড়াই কেটে সাবাড় করে দেওয়া হচ্ছে।
যেন দেখার কেউ নেই, ইচ্ছামত গাছ কেটে তা কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে এই গাছ বিক্রির সাথে জড়িত পানি উন্নয়ন বোর্ড শৈলকুপা শাখার কর্মকর্তা, এমএলএসএস সহ অনেকের বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে নিলাম হয়েছে শুধু বনজ গাছের কিন্তু কাটা হচ্ছে ফলদ গাছও !
সরেজমিনে দেখা যায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুষ্টিয়া প্রধান সেচ খালের শৈলকুপা উপজেলার লাঙলবাধ টু শেখপাড়া সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ চলছে।
এই সুযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ড শৈলকুপা শাখার কিছু কর্মকর্তা ও এমএলএসএস আঃ রশিদের যোগসাজসে মূল্যবান ফলদ গাছ কেটে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা। এ সমস্থ গাছের তালিকায় রয়েছে আম, জাম, কাঠাল,লিচু গাছ।
যদিও নিলামে উল্লেখ আছে কোন ফলদ গাছ কাটা যাবে না তার পরেও এই সব ফলদ গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে। সরকারী নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে এভাবে ইচ্ছামত গাছ কাটায় পরিবেশবাদীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
গাছ ব্যবসায়ী সাহেব আলী বলেন, আমরা এগাছগুলো যাদের বাড়ির সামনে পড়েছে সেই সমস্থ লোকদের কাছ থেকে কিনে নিয়েছি । এছাড়াও এসব গাছ বাবদ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এম এল এস এস আঃ রশিদকে ১ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলার কাশিনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা গোপাল বলেন, আমার বাড়ির সামনের গাছ তাই কাটছি তবে এসব গাছ কাটাবাবদ আঃ রশিদকে টাকা দেওয়া হয়েছে এবং তার কাছ থেকে গাছ কাটার অনুমতি নিয়েছি।
উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের মেম্বার আকরাম খান বলেন, এই এলাকার প্রচুর ফলদ গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। আর এ গাছকাটার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সেইসাথে গাছ কাটার অনুমতিও দিয়েছে।
আরেক গাছ ব্যবসায়ী আলিম উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন টাকা তো নিয়েছে এমনকি কাশিনাথপুরের বাসিন্দা মো: গওহর এর একটি মহানিমগাছ পানি উন্নয়ন বোর্ড এর এমএলএসএস আঃ রশিদ নিজেই কেটে নিয়ে গেছে।
এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড শৈলকুপা শাখার এমএলএসএস আঃ রশিদ বলেন, আমি এই সমস্থ গাছের দেখভালের দায়িত্বে আছি। যার যার বাড়ির সামনের গাছ তারা কেটে নিচ্ছে বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা কেউ আমার কথা শুনছে না।
শৈলকুপা বন কর্মকর্তা মোখলেচুর রহমান বলেন, এই সব গাছের ব্যাপারে ওয়াবদা কর্তৃপক্ষ ও বন বিভাগ পৃথক নিলাম আহ্বান করে । তবে কোন ফলদ গাছ কাটার নিলাম হয়নি এবং এসমস্ত গাছ কাটার অনুমতি দেয়া হয়নি। কোন ফলদ গাছ কাটা ঠিক হবে না।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী বিকর্ণ দাস বলেন, এভাবে যে ফলদ গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন তথ্য আমার জানা নেই তবে আপনার মাধ্যমে জানতে পেলাম তাই খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।