ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৪ নং দুধসর ইউপির ৯ টি কেন্দ্রে বহিরাগত প্রবেশ করে প্রকাশ্যে মোটর সাইকেল, তালা ও ফুটবল প্রতিকের ব্যালটে সীল প্রদান করায় নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত ও পুনঃরায় ভোট গ্রহণের দাবীতে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে শৈলকুপা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দোয়াত-কলম প্রতিকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শামীম হোসেন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে অভিযোগ করেন- শৈলকুপা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। আমার প্রতিক দোয়াত-কলম। গত ২১ মে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট শুরু হওয়ার আগে থেকেই আমার প্রতিদ্বন্দ্বী মোটর সাইকেল প্রতিকের প্রার্থী মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু ও তার ক্যাডার বাহিনী বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আগমনে রাস্তায় রাস্তায় বাঁধা দেয় তার সমর্থকরা। ভোটাগ্রহণের দিন সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বিএলকে মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমার সমর্থকদের আসতে বাঁধা দেওয়া হয়। এছাড়াও দুধসর ইউনিয়নের ৯ টি কেন্দ্রে সকাল থেকেই প্রভাব বিস্তার শুরু করেন মোটর সাইকেল প্রতিকের সমর্থকরা। এরপর শুরু হয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ব্যালটে সীল প্রদাণ করা। দুধসর ইউনিয়নের ফলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাজুখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুধসর ডিজিটাল স্কুল, ত্রিপুরাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মলমলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাটই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুলচারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর দুধসর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৯টি ভোট কেন্দ্রে জোরপূর্বক ব্যালটে সীল মেরে নেওয়া হয়। বহিরাগতরা প্রবেশ করে মোটর সাইকেল, তালা ও ফুটবল প্রতীকে অবৈধভাবে সীল প্রদান করে নেয়। নির্বাচনের দুইদিন আগ থেকেই আমার প্রতিপক্ষ মোটর সাইকেল প্রতিকের প্রার্থী মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নুর ক্যাডার বাহিনী দুধসর ইউনিয়নের সকল গ্রামে বাড়ীতে বাড়ীতে যেয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ত্রাস সৃষ্টি করে আমার সমর্থিত ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসতে নিষেধ করে ও দুধসর ইউনিয়নের ভোটাদেরকে পোলিং এজেন্ট হতে নিষেধ করে। এতে করে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ফলে দুধসর ইউনিয়নে কেউ পোলিং এজেন্টও হয়নি এবং ভোট কেন্দ্রে আসতে পারেনি। পরবর্তীতে আমি আমার ইউনিয়ন থেকে আমার সমর্থিত ভোটারদের ঐ কেন্দ্রসমূহে পোলিং এজেন্ট করে পাঠালে তাদেরকে মারধোর করে বের করে দেওয়া হয়। নির্বাচনের পরে মন্নু ও তার ক্যাডার বাহিনী আমাদের কর্মী সমর্থকদের বাড়ী ঘরে ব্যাপক ভাবে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করছে। অনেকের মারধোর করে শারীরিক ভাবে জখম করছে।
এছাড়াও ফলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে বিকাল সাড়ে ৩ টার সময় ব্যালটে সীল প্রদান করার ভিডিও সাংবাদিকগণ ধারণ করেন। সেই ভিডিও সময় টিভি, চ্যানেল ২৪ সহ বিভিন্ন অনলাইন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে এবং সেখানে প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। শুধুমাত্র ফলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রই নয়, দুধসর ইউনিয়নের সকল কেন্দ্রে এভাবে জোরপুবর্ক সীল মেরে নেওয়া হয়েছে। তাই আমি দুধসর ইউনিয়নের ওই ৯টি কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কাছে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।
সেসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- শৈলকুপা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা নাসরিন লিপি, ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুন্নবী কালু, উমেদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাবদার হোসেন মোল্লা, ত্রিবেনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মোল্লা, নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন বিশ^াস, সারুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসান, মির্জাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদসহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।