প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও প্রার্থীদের সাথে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে গাংনীর এইচ এম এইচ ভি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ পরীক্ষা সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।
তবে কি কারনে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে তার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছেন নিয়োগ বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মর্কর্তরা।
জানাগেছে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হিন্দা এইচ এম এইচ ভি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ২০১০ সালের শেষের দিকে সৃষ্ট সহকারি লাইব্রেরীয়ান শুন্য পদের জন্য গত ২ নভেম্বরে আগ্রহী প্রার্থীদের নিকট হতে দরখাস্ত আহব্বান করা হয়।
আবেদন গ্রহনের নিমিত্তে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর স্থানীয় মফিজুর রহমান,মেহেদী হাসান,শাহানাজ খাতুন ও রাবেয়া খাতুন মোট চার জন প্রার্থী উক্ত পদের জন্য আবেদন করেন।
তবে আবেদন কারিদের মধ্যে দুই জন অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরিরত থাকায় এলাকাবাসির মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তাছাড়া ডিজি’র মনোনীত প্রতিনিধি পরীক্ষার সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তার অনুপস্থিতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।
আবেদনকারীদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের জন্য গত ১৯ ডিসেম্বর তারিখে প্রবেশ পত্র প্রদান করেন নিয়োগ বোর্ডের কর্মকর্তা।
মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ডিজি’র মনোনীত প্রতিনিধি নিযুক্ত করে ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে গাংনী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সভা কক্ষে নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়।
পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পরে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে নিয়োগ পরীক্ষা সাময়িক স্থগীত হয়ে যায় বলে জানা গেছে। তবে কি কারনে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগীত করা হয়েছে তার সঠিক কারন জানাতে পারেনি নিয়োগ সংশ্লিষ্ট কর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানায়, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের যোগসাজসে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সহকারি লাইব্রেরীয়ান নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা এমন অভিযোগ তোলার কারনে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগীত করা হয়েছে বলে জানায় একজন কর্মকর্তা।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাসার জানান, আমি ডিজি প্রতিনিধির সাথে কথা বলে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হচ্ছিল,কিন্তু তার নির্দেশেই স্থগীত করা হয়েছে। তবে পরীক্ষা স্থগীতের যৌতিক কোন কারন আছে বলে আমার মনে হয়নি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীল আলম জানায়, বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য স্থানীয় শিক্ষীত ব্যাক্তিদের আর্থিক সহায়তায় বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়ে আসছে। টাকা পয়সা নিজেরা খরচ করে বিদ্যালয়টি পরিচানা করছেন। তবে পরীক্ষা স্থগীত করার কারন তিনিও জানেন না বলে জানিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ হালিম জানায়, নিয়মতান্ত্রিক ভাবেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। অদৃশ্য ইশারায় পরীক্ষা স্থগীত হওয়ায় আমি হতাশাগ্রস্থ।
নিয়োগ পরীক্ষায় নিযুক্ত ডিজি’র মনোনীত প্রতিনিধি মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শান্তি আরা বেগম জানান, নিয়োগ পরীক্ষার ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। আমাকে জানানো হয়নি। তাছাড়া আমি চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আছি। আমার সাথে কেউ কথা বলেনি। এসব বানোয়াট কথা বলা হচ্ছে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
– আল আমীন, মেহেরপুর