ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে আবাহনীর বিপক্ষে ৩১ রানে জয় পেয়েছে মোহামেডান।
তবে শুক্রবারের সেই ম্যাচের ফলাফলকে ছাপিয়ে এখন খবরের শিরোনামে মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের অক্রিকেটীয় কাণ্ড।
ব্যাট হাতে ৩৭ রান করলেও বল হাতে মহাবিতর্কের জন্ম দিয়েছেন সাকিব।
আবাহনীর অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় মুহূর্তেই ক্ষেপে যান সাকিব।
প্রথমে লাথি মেরে উইকেট ভাঙেন, এরপর আম্পায়ারের দিকে তেড়ে গিয়ে তর্ক করেন। এমনকি পরে উইকেট উপড়ে নিয়ে আছাড়ও মেরেছেন তিনি। এতে ক্ষান্ত হননি, আবাহনীর ড্রেসিংরুমের দিকে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে তাদের কোচ খালেদ মাহমুদের দিকে তেড়ে গেছেন।
সেসব ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে রীতিমতো ভাইরাল। সাকিবকাণ্ড নিয়ে ফেসবুকে ঝড় চলছে। দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।
অনেকে সাকিবকে বেয়াদব আখ্যা দিয়ে তুলোধোনা করেছেন। কেউ কেউ আবার, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাকিব রুখে দাঁড়িয়েছেন বলেও পোস্ট দিয়েছেন।
শুক্রবার বিকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাকিবকাণ্ডেই সরগরম হয়ে আছে, যার রেশ এখনও চলছে।
সাইফুল ইসলাম নামে এক নেটিজেন লিখেছেন, সাকিবের লাথি বড় এক অশনিসংকেতেরই বোধ হয় ডাক দিল বাংলাদেশের ক্রিকেটে। তবে সাকিব অন্যায় করেছেন, এটা যেমন ঠিক, তাঁর শাস্তি পাওয়াটা যেমন উচিত; একইভাবে এ কথাও বলতে দ্বিধা নেই—নোংরা ক্লাবরাজনীতিতে কলুষিত বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের জন্য এ রকম একটা লাথি বড় দরকার ছিল।
মো. মাহবুবুর রহমান লিখেছেন, এমন আচরণের কারণে চূড়ান্ত ভাবে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। এই দেখে অন্য কোনো খেলোয়াড় যেন এমন ভুল না করে। তাকে বহিষ্কার করা হোক, এমন আইডল দরকার নেই বাংলাদেশের। যার কারণে বিশ্ব দরবারে অপমানিত হতে হয় বাংলাদেশকে, এমন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের দরকার নেই।
কামরুজ্জামান চঞ্চল লিখেছেন, হ্যা, সাকিব বেয়াদব। তাকে শাস্তি দিন। তবে ও ওর মান অনুযায়ী বেয়াদব। এই সাকিবের মাঝেই লুকিয়ে আছে চরম অন্যায়ের প্রতিবাদী কণ্ঠ। গতকাল তার লাথি মারায় বিষয়টি আবার ফুটে উঠেছে।বেয়াদবের প্রতি ভালোবাসা আবার শুরু হয়ে গেল।
কাজি রাজন লিখেছেন, সাকিবকে নিয়ে যে যাই বলুক, তার কিছু আসবে যাবে না। সাকিব শুধু খেলোয়াড়ই নন, তিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান।
সত্যের সন্ধানে নামে এক আইডি লিখেছেন, সাকিবকে শাস্তি দিলে বাংলাদেশ ক্রিকেটে লুকিয়ে থাকা দুর্নীতিবাজদেরও শাস্তি দিতে হবে।
টিটু সরকার লিখেছেন, সাকিব একজন আইকন। তার কাজ, চরিত্র ফলো করে এমন তরুণ, কিশোরের অভাব নেই। সেখানে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হয়ে যদি সাকিব মাঠে এমন বাজে আচরণ করে, তবে তার ফলোয়াড়রা কি শিখবে। এটাকে প্রতিবাদ বলে না।
এমন মন্তব্যের জবাবে মিলন মিয়া লিখেছেন, এমন অনিয়ম শৃংখলা মেনে কখনো প্রতিবাদ হয় না। প্রতিবাদ করতে গেলে নিয়ম শৃংখলা ভাঙ্গতেই হয়। সাকিব তাই করেছেন।
আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের একজন লিখেছেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ কিভাবে করতে হয় তুমি আবারও দেখিয়ে দিলে। গর্বে বুকটা ফুলে ওঠে যে আমাদের একটা সাকিব আছে।
ইয়াছিন হানজালা ইফতি লিখেছেন, গ্রেট জব সাকিব-আল-হাসান। আপনি ১০০ শতাংশ ঠিক আছেন। এইরকম অবাধ্য, উদ্ধত বলেই মিডিওকিউর একটা দল থেকে আপনি বিশ্বসেরার কাতারে যেতে পেরেছেন। নিয়ম মানা বাধ্য গৃহপালিত অবলা প্রাণী হলে লেভেলটা বড়জোর ওই আশরাফুল পর্যন্তই যাইত। অথর্ব ম্যানেজমেন্ট ১০ বছর ধরে একটা প্লেয়ার বের করতে পারে নাই এইসব করে। আপনাদের দৌড় সাকিবরে নিষিদ্ধ করা পর্যন্তই। প্রতিটি ক্রিকেটার একজন করে সাকিব হলে আমাদের দেশের ক্রিকেট আজ আরো বেশি ভালো থাকতো। সাকিবের এই লাথি স্ট্যাম্পে নয়. এই লাথি আমাদের দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের দুর্নীতির মুখে মারা হয়েছে।
আয়শা জাহান তন্বী লিখেছেন, সাকিবকে বহিষ্কার করা এখন সময়ের দাবি।
মোশাররফ নামের একজন লিখেছেন, সাকিব যা করছে ভাল করেছে। একজন খেলোয়াড় কোনো কারণ ছাড়া আম্পায়ার সাথে এভাবে রাগান্বিত হতে পারে না! হ্যাঁ তার স্ট্যাম্প তুলে ফেলাঠিক হয় নাই ,এটা ক্রিকেট প্রতি অস্মমান।